বৃহস্পতিবার, ৯ অক্টোবর, ২০২৫
শুক্রবার, ১ আগস্ট, ২০২৫
বাংলাদেশ বৌদ্ধ ছাত্র ক্লাব এমসিইউ, থাইল্যান্ডের উপদেষ্টা পরিষদ গঠিত
বাংলাদেশ বৌদ্ধ ছাত্র ক্লাব, এমসিইউ, থাইল্যান্ড তাদের আদর্শিক ভিত্তি ও সাংগঠনিক কাঠামোকে শক্তিশালী করতে একটি উপদেষ্টা পরিষদ ঘোষণা করেছে। এই নতুন পরিষদটি ছাত্রসমাজের সার্বিক কল্যাণ, জ্ঞানচর্চা, নৈতিক মূল্যবোধ গঠন এবং বৌদ্ধ ধর্ম ও সংস্কৃতির বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা হচ্ছে।
সংগঠনটি মূলত একটি বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক প্ল্যাটফর্ম, যা দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষার্থীদের মধ্যে মানবিকতা, ঐক্য এবং ধর্মীয় মূল্যবোধ প্রসারে কাজ করছে। উপদেষ্টা পরিষদ গঠনের মধ্য দিয়ে তাদের পথচলা আরও সুসংহত হবে।
উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যরা হলেন:
* পরম পূজনীয় ভদন্ত সুগতপ্রিয় মহাথের মহোদয়
* পরম পূজনীয় ড. ভদন্ত তিরোসাতু থের মহোদয়
* পরম পূজনীয় ড. ভদন্ত ধর্মপ্রিয় থের মহোদয়
* পরম পূজনীয় ভদন্ত অনুরুদ্ধ থের মহোদয়
* পরম পূজনীয় ভদন্ত সত্যজিৎ থের মহোদয়
সংগঠনের পক্ষ থেকে এই পূজনীয় ভদন্তদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা হয়েছে। তাঁদের জ্ঞান, অভিজ্ঞতা এবং দিকনির্দেশনা সংগঠনের লক্ষ্য পূরণে সহায়ক হবে বলে জানানো হয়েছে।
সংগঠনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য:
* শিক্ষার্থীদের মধ্যে ঐক্য, মানবিকতা এবং নৈতিক মূল্যবোধের বিকাশ ঘটানো।
* বৌদ্ধ ধর্ম, দর্শন, নীতি এবং সংস্কৃতির জ্ঞানচর্চা ও প্রসার করা।
* বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন কার্যক্রমে শিক্ষার্থীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা।
* আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের বৌদ্ধ ছাত্রদের পরিচিতি এবং প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করা।
সংগঠনের কর্মকর্তারা বিশ্বাস করেন, নবগঠিত এই উপদেষ্টা পরিষদ তাদের আদর্শিক এবং সাংগঠনিক কাঠামোকে আরও শক্তিশালী করবে। এতে করে তারা একটি আলোকিত ভবিষ্যতের দিকে এগিয়ে যেতে পারবেন।
১২৭ বছর পর ভারতে ফিরে এলো বুদ্ধের মূল্যবান রত্ন
:ভারতের ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের এক নতুন অধ্যায় রচিত হলো। দীর্ঘ ১২৭ বছর পর বুদ্ধের পবিত্র গহনাগুলো ভারতে ফিরিয়ে আনা হয়েছে। ১৮৯৮ সালে বর্তমান উত্তর প্রদেশের পিপরাহওয়া থেকে আবিষ্কৃত এই অমূল্য নিদর্শনগুলো কূটনীতি, সংস্কৃতি এবং ধর্মীয় মূল্যবোধের এক অসাধারণ সমন্বয়ের মাধ্যমে উদ্ধার করা সম্ভব হয়েছে।
ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপট
ব্রিটিশ প্রকৌশলী উইলিয়াম ক্ল্যাক্সটন পেপে ১৮৯৮ সালে পিপরাহওয়া স্তূপের কাছে এই গহনাগুলো আবিষ্কার করেন। এগুলোর মধ্যে ছিল বুদ্ধের স্মৃতিবিজড়িত রিলিকুয়ারি, স্ফটিকের বাক্স, অলঙ্কার এবং পোড়া মানব দেহাবশেষ। একটি লিপির মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া যায় যে এগুলি সাক্য গোত্রের ছিল, যা গৌতম বুদ্ধের আত্মীয়দের গোত্র। দীর্ঘ সময় ধরে বিভিন্ন সংগ্রহে থাকার পর সম্প্রতি গহনাগুলির একটি অংশ হংকংয়ের সোথেবি'স নিলামে ওঠে আসে, যা ভারতের জন্য এক বিরাট আঘাত ছিল।
সরকারের দৃঢ় পদক্ষেপ
নিলামের খবর জানার পর ভারত সরকার এই নিলাম ঠেকাতে দ্রুত পদক্ষেপ নেয়। বিদেশ মন্ত্রণালয়, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয় এবং লন্ডন ও হংকংয়ে অবস্থিত ভারতীয় মিশনগুলো কূটনৈতিক চাপ সৃষ্টি করে। একই সঙ্গে, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের অধীনে স্বায়ত্তশাসিত সংস্থা, আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ কনফেডারেশন (IBC) বিশ্বজুড়ে বৌদ্ধ নেটওয়ার্কগুলির সঙ্গে যোগাযোগ করে নৈতিক চাপ তৈরি করে।
IBC-এর মহাপরিচালক অভিজিৎ হালদার এই ঘটনাকে শুধু প্রত্নতাত্ত্বিক পুনরুদ্ধার নয়, বরং "একটি জীবন্ত ধর্মের সবচেয়ে পবিত্র স্মৃতির পুনরুদ্ধার" হিসেবে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির নেতৃত্বে ভারত দেখিয়েছে যে ধর্মীয় মূল্যবোধের ভিত্তিতে কীভাবে কার্যকর কূটনীতি পরিচালিত হতে পারে।
গৌরবময় প্রত্যাবর্তন
গত ৩০শে জুলাই, ২০২৫ তারিখে নয়াদিল্লিতে এক জমকালো অনুষ্ঠানের মাধ্যমে গহনাগুলোর প্রত্যাবর্তন উদযাপন করা হয়। এই অনুষ্ঠানে বৌদ্ধ সন্ন্যাসী, কূটনীতিক এবং উচ্চপদস্থ সাংস্কৃতিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। গহনাগুলো বর্তমানে জাতীয় জাদুঘরে রাখা হয়েছে, যেখানে এগুলি জনসাধারণের জন্য প্রদর্শন করা হবে। ভবিষ্যতে সারণাথ, কুশীনগর অথবা লুম্বিনি-কপিলাবস্তু করিডরের মতো গুরুত্বপূর্ণ বৌদ্ধ স্থানগুলিতে এগুলির স্থায়ী স্থান হতে পারে।
ঐতিহাসিক তাৎপর্য
গৌতম বুদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন অধ্যাপক ড. অরবিন্দ কুমার সিংহ এই ঘটনাকে "ভারতের ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণের ক্ষেত্রে একটি মাইলফলক" হিসেবে চিহ্নিত করেছেন। তিনি বলেন, এটি কেবল গহনাগুলোর প্রত্যাবর্তন নয়, এটি "ভারতের আত্মার প্রত্যাবর্তন।"
এই ঐতিহাসিক পুনরুদ্ধার ভারতের ইতিহাসের এক সোনালি অধ্যায় হিসেবে চিহ্নিত হবে, যা বিশ্বের কাছে ভারতের ঐতিহ্য এবং সংস্কৃতি সংরক্ষণে তার প্রতিশ্রুতির বার্তা দেবে। এই মুহূর্তটি শুধু ভারতের জন্যই নয়, বিশ্বজুড়ে বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কাছেও এক অমূল্য প্রাপ্তি, যা তাদের বিশ্বাস এবং ইতিহাসের প্রতি এক গভীর শ্রদ্ধার প্রতিফলন।
শনিবার, ২৬ জুলাই, ২০২৫
ভারতবর্ষে বৌদ্ধধর্ম পুনর্জাগরণের অগ্রদূত অনাগরিক ধর্মপাল
![]() |
| অনাগরিক ধর্মপাল |
অনাগরিক ধর্মপাল কেবল একজন বৌদ্ধ পণ্ডিতই ছিলেন না, তিনি ছিলেন একজন নিবেদিতপ্রাণ ধর্মপ্রচারক এবং সমাজ সংস্কারক। মাত্র ১৪ বছর বয়সে থিওসোফিক্যাল সোসাইটির সাথে যুক্ত হয়ে তিনি বৌদ্ধ ধর্ম ও দর্শন সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন শুরু করেন। খ্রিস্টান মিশনারি স্কুলে অধ্যয়নকালে তাঁকে ধর্মান্তরিত করার প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়, বরং তিনি নিজেই সহপাঠীদের মধ্যে বৌদ্ধধর্ম প্রচার করতে থাকেন।
মহাবোধি সোসাইটি প্রতিষ্ঠা ও বুদ্ধগয়া পুনরুদ্ধার আন্দোলন
ধর্মপালের জীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ মোড় ছিল ১৮৯১ সালে বুদ্ধগয়া ভ্রমণ। সেখানে বৌদ্ধ ধর্মের পবিত্রতম স্থানগুলির অবহেলা দেখে তিনি ব্যথিত হন এবং এর হারানো গৌরব পুনরুদ্ধারের সংকল্প করেন। এই উদ্দেশ্যেই তিনি ১৮৯১ সালের ৩১ মে শ্রীলঙ্কায় মহাবোধি সোসাইটি প্রতিষ্ঠা করেন। পরের বছর ১৮৯২ সালে এর মূল কার্যালয় কলকাতায় স্থানান্তরিত হয়, যা ভারতে বৌদ্ধধর্মের পুনরুত্থানে এক নতুন দিগন্ত উন্মোচন করে। মহাবোধি সোসাইটির মাধ্যমে তিনি বুদ্ধগয়া মন্দির পুনরুদ্ধারের জন্য আন্দোলন শুরু করেন, যা পরবর্তীতে ব্যাপক সাফল্য লাভ করে।
বিশ্ব ধর্ম মহাসম্মেলনে ধর্মপালের প্রভাব
১৮৯৩ সালে আমেরিকার শিকাগো শহরে অনুষ্ঠিত 'ওয়ার্ল্ডস পার্লামেন্ট অফ রেলিজিয়নস' (The World's Parliament of Religions) সম্মেলনে বৌদ্ধ ধর্মের প্রতিনিধি হিসেবে অনাগরিক ধর্মপাল অংশগ্রহণ করেন। তাঁর জ্ঞানগর্ভ ও প্রভাবশালী বক্তব্য বিশ্বজুড়ে ব্যাপক প্রশংসা লাভ করে এবং তাঁকে সম্মেলনের অন্যতম জনপ্রিয় বক্তা হিসেবে পরিচিতি এনে দেয়। এই সম্মেলনের মাধ্যমে তিনি বৌদ্ধ ধর্মের বাণীকে পাশ্চাত্যে পৌঁছে দেন।
সমাজসেবা ও ভারতীয় বুদ্ধিজীবীদের সাথে সম্পর্ক
ধর্মপাল কেবল ধর্মীয় প্রচারেই সীমাবদ্ধ ছিলেন না, তিনি সমাজসেবামূলক কাজেও সক্রিয় ছিলেন। ১৮৯৭ সালে যখন বাংলায় ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ দেখা দেয়, তখন তিনি বিশ্বের বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের কাছ থেকে অর্থ সংগ্রহ করে আর্তমানবতার সেবায় এগিয়ে আসেন। ভারতীয় মেধার সমন্বয় সাধন ছিল তাঁর একটি বিশেষ উদ্দেশ্য। তিনি মহাত্মা গান্ধী, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশ, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর, এস রাধাকৃষ্ণান প্রমুখ বরেণ্য ব্যক্তিত্বদের মহাবোধি সোসাইটির সাথে যুক্ত করেছিলেন, যারা তাঁর কাজে পূর্ণ সমর্থন জানিয়েছিলেন।
সারনাথ ও শেষ জীবন
ধর্মপাল সারনাথে বুদ্ধের ধর্মচক্রপ্রবর্তন স্থানের রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব মহাবোধি সোসাইটির মাধ্যমে লাভ করেন। ১৯২২ সালে তিনি সারনাথ মূলগন্ধকূটি বিহারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন এবং সেখানে ধর্মশালা, ইন্টারন্যাশনাল বুদ্ধিস্ট ইনস্টিটিউট ও একটি বিশ্ববিদ্যালয় গড়ে তোলেন। ১৯৩১ সালে তিনি বৌদ্ধ ভিক্ষু হিসেবে দীক্ষা গ্রহণ করেন এবং 'শ্রী দেবমিত্র ধর্মপাল' নাম ধারণ করেন। ১৯৩৩ সালের ২৯ এপ্রিল সারনাথে এই মহান ব্যক্তিত্ব শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তাঁর ভস্মাবশেষ সারনাথের মূলগন্ধকূটি বিহারের সামনে স্থাপন করা হয়েছে।
অনাগরিক ধর্মপাল কেবল শ্রীলঙ্কাতেই নয়, ভারতসহ বিশ্বজুড়ে বৌদ্ধ ধর্মের পুনরুজ্জীবন ও প্রচারে এক অবিস্মরণীয় অবদান রেখে গেছেন, যা আজও মানুষকে অনুপ্রাণিত করে।
শুক্রবার, ২৫ জুলাই, ২০২৫
বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভা কতৃক আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা
চট্টগ্রাম, ২৬ জুলাই ২০২৫ – গত ২৮ মার্চ, ২০২৫ তারিখে মায়ানমার ও থাইল্যান্ডে আঘাত হানা ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে দাঁড়িয়ে বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভা এক অনন্য মানবিক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। ভূমিকম্পে যাদের আশ্রয়স্থল সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল, এমন ৭টি পরিবারের জন্য নতুন বাড়ি নির্মাণের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলো মহাসভা। দীর্ঘ দুই মাস ধরে নির্মাণাধীন এই ৭টি বাড়ির কাজ আজ (২৫ জুলাই, ২০২৫) সম্পূর্ণ হয়েছে।
ভূমিকম্পের পরপরই বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভা ক্ষতিগ্রস্তদের সহায়তার জন্য ভিক্ষু ও দায়কদের কাছ থেকে অর্ধকোটি টাকার বেশি তহবিল সংগ্রহ করে। এই মহতী উদ্যোগের অংশ হিসেবে গত ১৪ মে, ২০২৫ তারিখে বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভার সভাপতি ও মহাসচিবসহ পাঁচ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল মায়ানমার সফর করেন। সেখানে তারা প্রায় ৮০০ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে নগদ অর্থ সহায়তা প্রদান করেন। এছাড়াও, বেশ কয়েকটি হাসপাতাল, ২৫টির মতো বৌদ্ধ বিহার, ৩টি মসজিদ এবং ১টি মাদ্রাসাতেও আর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়।
মহাসভার এই ত্রাণ কার্যক্রমের একটি স্থায়ী মানবিক কর্ম হিসেবে ক্ষতিগ্রস্তদের জন্য ৭টি নতুন বাড়ি তৈরির সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছিল। এই উদ্যোগের মূল লক্ষ্য ছিল বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভার সহায়তার মাধ্যমে উভয় দেশের বৌদ্ধদের মধ্যে সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় করা এবং এই দৃষ্টান্তকে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে টিকিয়ে রাখা।
আজ ৭টি বাড়ির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন হওয়ার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভার এই মানবিক অঙ্গীকার পূর্ণতা পেল। এই পদক্ষেপ কেবল ক্ষতিগ্রস্তদের আশ্রয় নিশ্চিত করবে না, বরং দুর্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়ানোর এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে।
রবিবার, ২০ জুলাই, ২০২৫
লন্ডনে দৃষ্টি চাকমার অসাধারণ সাফল্য:সেরা ৭০০০ ড্রইংয়ের মধ্যে স্থান করে নিয়েছে তার চিত্রকর্ম
লন্ডন, ২০ জুলাই ২০২৫ – বাংলাদেশের তরুণ শিল্পী দৃষ্টি চাকমা লন্ডনে এক অভাবনীয় সাফল্য অর্জন করেছেন। তার আঁকা একটি চিত্রকর্ম Archisource আয়োজিত London Creates 2025 প্রদর্শনীতে সারা বিশ্বের ৭,০০০টি ড্রইংয়ের মধ্যে থেকে 'ড্রইং অফ দ্য ইয়ার অ্যাওয়ার্ডস'-এর অন্যতম সেরা কাজ হিসেবে নির্বাচিত হয়েছে। এটি শিল্পী এবং বাংলাদেশের জন্য এক বিশাল গর্বের মুহূর্ত।
হৃষিতা সিংয়ের সাথে একটি একাডেমিক সহযোগিতার অংশ হিসেবে তৈরি করা এই চিত্রকর্মটি বর্তমানে লন্ডনের দ্য ট্রুম্যান ব্রুয়ারি-তে প্রদর্শিত হচ্ছে। এই প্রদর্শনীতে Foster + Partners এবং RSHP-এর মতো বিশ্বখ্যাত স্থাপত্য সংস্থা ও সৃজনশীল স্টুডিওগুলোর কাজের পাশাপাশি দৃষ্টি চাকমার কাজটিও স্থান পেয়েছে, যা বিল্ট এনভায়রনমেন্টে সৃজনশীলতার এক বড় উদযাপন।
দৃষ্টি চাকমার এই কাজটি নির্বাচন করেছেন একদল অত্যন্ত সম্মানিত জুরি। এই জুরি প্যানেলে ছিলেন Narinder Sagoo MBE (Foster + Partners), Jim Heverin (Zaha Hadid Architects), Will Johnston (RSHP), Sam Conway (Hayes Davidson), Eliza Grosvenor (London Festival of Architecture), এবং Archisource-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা Mansel Haynes ও Emily Glynn-এর মতো বিশ্ববরেণ্য ব্যক্তিরা।
এই ড্রইংটি মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের স্যামুয়েল হান্টার-এর নেতৃত্বে M.Arch ডিজাইন স্টুডিও 'আর্ট, কালচার অ্যান্ড আদার থিংস' (@studio44_msd)-এর অধীনে তৈরি করা হয়েছিল।
এই অসাধারণ সাফল্যের আরেকটি অংশ হলো, কাজটি 'Drawing of the Year 2025' বইয়েও প্রকাশিত হয়েছে। এই বইটিতে এই বছরের প্রদর্শনীর সেরা ভিজ্যুয়াল কাজগুলো স্থান পেয়েছে।
শিল্পী দৃষ্টি চাকমা Archisource-কে এই সুযোগ দেওয়ার জন্য আন্তরিক ধন্যবাদ জানিয়েছেন। এই প্রদর্শনীটি ১৯ জুলাই পর্যন্ত দ্য ট্রুম্যান ব্রুয়ারিতে সকলের জন্য বিনামূল্যে উন্মুক্ত ছিলো। তার এই অর্জন নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের শিল্প জগতে নতুন প্রেরণা যোগাবে।
মঙ্গলবার, ১ জুলাই, ২০২৫
মহাবোধি বিহারের নিয়ন্ত্রণ বৌদ্ধদের কাছে হস্তান্তরের আবেদন খারিজ করল সুপ্রিম কোর্ট
১৯৪৯ সালের বোধগয়া মন্দির আইনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে এবং মহাবোধি মন্দিরের নিয়ন্ত্রণ সম্পূর্ণরূপে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের হাতে তুলে দেওয়ার দাবিতে দায়ের করা একটি আবেদন গতকাল সোমবার ৩০ জুন, ২০২৫ গ্রহণ করতে অস্বীকার করেছে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট।
বিচারপতি এম এম সুন্দরেশ এবং বিচারপতি কে বিনোদ চন্দ্রনের সমন্বয়ে গঠিত অবকাশকালীন বেঞ্চ সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদের অধীনে দায়ের করা এই আবেদনটির শুনানি করেন। বেঞ্চ জানায়, এই বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টে গ্রহণযোগ্য নয় এবং আবেদনকারীকে পাটনা হাইকোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার স্বাধীনতা দেওয়া হয়েছে।
বেঞ্চ নির্দেশ দিয়েছে, "আমরা সংবিধানের ৩২ অনুচ্ছেদ অনুসারে এই আবেদনটি গ্রহণ করতে আগ্রহী নই। তবে, আবেদনকারীকে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার স্বাধীনতা দেওয়া হচ্ছে।"
শুনানির সময়, বিচারপতিরা আবেদনকারীর আইনজীবীর কাছে চাওয়া ত্রাণের প্রকৃতি সম্পর্কে প্রশ্ন করেন। জবাবে আইনজীবী বলেন, "আমি প্রার্থনা করেছি যে বোধগয়া মন্দির আইনকে অতি-ভাইরাস (ক্ষমতার বাইরে) ঘোষণা করে বাতিল করা হোক।"
বেঞ্চ তখন মন্তব্য করে, "কেন আপনি হাইকোর্টে এটি করছেন না? আমরা কীভাবে একটি ম্যান্ডামাস জারি করতে পারি? দয়া করে হাইকোর্টে যান।"
সুলেখা দেবী নলিনী দেবী নারায়ণরাও কুম্ভারে এই আবেদনটি দায়ের করেছিলেন। তিনি আদালতকে কেন্দ্র এবং বিহার সরকারকে ১৯৪৯ সালের আইনটি সংশোধন করতে এবং মহাবোধি মন্দিরের নিয়ন্ত্রণ বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশ দিতে অনুরোধ করেছিলেন। আবেদনকারী যুক্তি দিয়েছিলেন যে বর্তমান শাসন কাঠামো, যেখানে রাজ্যের তত্ত্বাবধানে হিন্দু এবং বৌদ্ধ উভয় প্রতিনিধিই অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, তা বৌদ্ধদের ধর্মীয় অধিকারকে ক্ষুন্ন করে। তিনি তাদের আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য অনুসারে সম্পূর্ণ বৌদ্ধ নিয়ন্ত্রণের দাবি জানান।
১৯৪৯ সালের বোধগয়া মন্দির আইন মহাবোধি মন্দির কমপ্লেক্সের উন্নত ব্যবস্থাপনার জন্য প্রণীত হয়েছিল, যা বৌদ্ধ ধর্মের অন্যতম পবিত্র স্থান হিসাবে বিবেচিত। ইউনেস্কো ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ সাইটটিতে একটি ৫০ মিটার উঁচু বিশাল মন্দির, বজ্রাসন (ডায়মন্ড সিংহাসন), পবিত্র বোধি বৃক্ষ এবং ভগবান গৌতম বুদ্ধের জ্ঞান লাভের সাথে যুক্ত আরও ছয়টি পবিত্র স্থান রয়েছে। সপ্তম স্থান, পদ্ম পুকুর, মূল ঘেরের বাইরে অবস্থিত।
চলতি বছরের এপ্রিলে, রাষ্ট্রীয় লোক মোর্চার নেতা এবং প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী উপেন্দ্র কুশওয়াহাও ১৯৪৯ সালের আইন সংশোধনের দাবি জানিয়েছিলেন, তিনি মহাবোধি মহাবিহার মন্দিরের প্রশাসন বৌদ্ধদের কাছে হস্তান্তরের পরামর্শ দিয়েছিলেন।
সুপ্রিম কোর্টের সোমবারের এই সিদ্ধান্তের ফলে আরও আইনি লড়াইয়ের পথ খোলা রইল, তবে এখন হাইকোর্টের মাধ্যমে উপযুক্ত ফোরামে এই বিষয়টি উত্থাপন করতে হবে।
শুক্রবার, ২৩ মে, ২০২৫
বিশ্ববিখ্যাত বাঙালি বৌদ্ধ পণ্ডিত অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান: ধর্ম প্রচার ও জ্ঞানের আলোকবর্তিকা
অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান (৯৮২–১০৫৪ খ্রিঃ) ছিলেন একজন প্রখ্যাত বাঙালি বৌদ্ধ পণ্ডিত, আচার্য এবং ধর্মপ্রচারক, যিনি পাল সাম্রাজ্যের শাসনামলে জন্মগ্রহণ করেন এবং তিব্বতে বৌদ্ধ ধর্মের পুনর্জাগরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
জন্ম ও শৈশব
অতীশ দীপঙ্করের জন্ম ৯৮২ খ্রিষ্টাব্দে বর্তমান বাংলাদেশের মুন্সীগঞ্জ জেলার বিক্রমপুরের বজ্রযোগিনী গ্রামে। তাঁর পিতা ছিলেন রাজা কল্যাণশ্রী এবং মাতা প্রভাবতী। জন্মের সময় তাঁর নাম রাখা হয় চন্দ্রগর্ভ।
শিক্ষা ও দীক্ষামাত্র ১২ বছর বয়সে তিনি নালন্দা মহাবিহারে অধ্যয়ন শুরু করেন এবং আচার্য বোধিভদ্রের নিকট শ্রমণ দীক্ষা গ্রহণ করেন, তখন তাঁর নাম হয় দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান। পরবর্তীতে তিনি বিক্রমশীলা, ওদন্তপুরী এবং অন্যান্য বিখ্যাত বৌদ্ধ শিক্ষাকেন্দ্রে অধ্যয়ন করেন। তিনি তন্ত্র, যুক্তিবিদ্যা, দর্শন ও চিকিৎসাশাস্ত্রে পারদর্শিতা অর্জন করেন।
ধর্মপ্রচার ও তিব্বত যাত্রা
তিব্বতের রাজা ব্যাং-ছুব-য়ে-শেস’-ওদ অতীশ দীপঙ্করকে তিব্বতে আমন্ত্রণ জানান। প্রথমে তিনি এই আমন্ত্রণ প্রত্যাখ্যান করেন, কিন্তু পরবর্তীতে রাজা বন্দী হলে এবং তাঁর পুত্র ল্হা-লামা-ব্যাং-ছুব-ওদ অতীশ দীপঙ্করকে তিব্বতে আনতে উদ্যোগী হন। ১০৪০ খ্রিষ্টাব্দে তিনি তিব্বতের থোলিং বিহারে পৌঁছান এবং সেখানে বৌদ্ধ ধর্মের পুনর্জাগরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন।
সাহিত্যকর্ম ও দর্শন
অতীশ দীপঙ্কর বহু গ্রন্থ রচনা করেন, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য 'বোধিপথপ্রদীপ'। এই গ্রন্থে তিনি বোধিসত্ত্বের পথ এবং মহাযান বৌদ্ধ দর্শনের মৌলিক দিকগুলো ব্যাখ্যা করেন।
মৃত্যু ও উত্তরাধিকার
তিব্বতে ১৭ বছর ধর্মপ্রচারের পর ১০৫৪ খ্রিষ্টাব্দে তিনি নিঃশেষ হন। তাঁর প্রধান শিষ্য ব্রোম-স্তোন-পা-র্গ্যল-বা'ই-'ব্যুং-গ্নাস কাদম্পা সম্প্রদায় প্রতিষ্ঠা করেন, যা পরবর্তীতে গেলুকপা সম্প্রদায়ের ভিত্তি হয়।
সম্মান ও প্রভাব
২০০৪ সালে বিবিসি বাংলার জরিপে সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালিদের তালিকায় তিনি ১৮ নম্বরে স্থান লাভ করেন। [5] তিব্বতে তাঁকে 'জোবো ছেনপো' বা 'মহাপ্রভু' উপাধিতে অভিহিত করা হয়। [3]
📌অতীশ দীপঙ্কর শ্রীজ্ঞান ছিলেন এক অনন্য বাঙালি বৌদ্ধ পণ্ডিত, যিনি জ্ঞান, নৈতিকতা ও মানবতাকে একসূত্রে বেঁধেছিলেন। তাঁর জীবন ও কর্ম আজও বৌদ্ধ ধর্মের অনুসারীদের জন্য অনুপ্রেরণার উৎস।
বুধবার, ২১ মে, ২০২৫
মিয়ানমার ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্থদের সহায়তা পৌঁছে দিয়েছেন বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভা
মায়ানমার ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভা কর্তৃক সংগৃহিত সহায়তা পৌঁছে দিতে, ৫ জন সাংঘিক ব্যক্তির একটি টিম সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত খরচে মায়ানমার যায়।প্রতিনিধি দলের সদস্যরা হলেন, ১/ ভদন্ত প্রিয়ানন্দ মহাস্থবির ২/ ভদন্ত মৈত্রীপ্রিয় মহাস্থবির, ৩/ ভদন্ত ড. সংঘপ্রিয় মহাস্থবির, ৪/ভদন্ত প্রজ্ঞাবোধি মহাস্থবির, ৫/ ভদন্ত কে. শ্রী. জ্যোতিসেন মহাস্থবির।
বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভার মাননীয় প্রতিনিধি বৃন্দ আজ গত ১৯ মে সকালে ৩১৭টি ক্ষতি -গ্রস্থ পরিবারের মধ্যে নগদ অর্থ প্রদান করেন, ৭০০ব্যাডের সেনাবাহিনী হাসপাতালে রোগীদের আর্থিক অনুদান, সেনাবাহিনী হাসপাতালের চিকিৎসা তহবিলে ৫২লক্ষ কিয়েট প্রদান,কয়েক -টি বিহার ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান,একটি মাদ্রাসা ও ৩টি মসজিদে মহাসভার মানবিক তহবিলের সহায়তা যাদের প্রয়োজন তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভার পক্ষ থেকে এই মানবিক সহযোগিতার কথাশুনে তারা উপস্থিত প্রতিনিধি বৃন্দকে এবং বাংলাদেশীদের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।
বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভার পক্ষ থেকে বলেন যারা তহবিল সংগ্রহ করার জন্য দিনরাত কাজ করেছে তাদের জন্য কৃতজ্ঞতার সাথে ধন্যবাদ, যারা মানবিক সহযোগিতা করেছেন তাদের দান মহাসভার মাননীয় প্রতিনিধি বৃন্দ প্রতিক্ষণ প্রতিটি মুহুর্তে ভুক্তভোগীদের হাতে সরাসরি তুলে দিচ্ছে।
সোমবার, ১৯ মে, ২০২৫
মায়নমারের ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্থ মসজিদ ও মাদ্রাসাতে সাধ্যমত সহায়তা প্রদান করছেন বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভা'র প্রতিনিধি দল।
![]() |
| মানবিক সহায়তা প্রদানের সময় |
মহাসভার মানবিক তহবিলের সহায়তা যাদের প্রয়োজন তাদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এলাকার মুরব্বি মুসল্লীরা ভিক্ষুদের দেখে এবং বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভার পক্ষ থেকে এই মানবিক সহযোগিতার কথাশুনে তারা উপস্থিত প্রতিনিধি বৃন্দকে এবং বাংলাদেশীদের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন।

শুক্রবার, ১৬ মে, ২০২৫
বিহারের রাজ্যপাল আরিফ মোহাম্মদ খানের অবিলম্বে পদত্যাগ দাবি
সোমবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২
বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভার উদ্যোগে দানের টাকায় শ্রীলঙ্কার প্রতি কৃতজ্ঞ পূজা
প্রতিবেদন - বিপসসী ভিক্ষু
বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভার উদ্যেগে আমেরিকা, কানাডা, ফ্রান্স, স্পেন, থাইল্যান্ড, দুবাই ও বাংলাদেশী বৌদ্ধদের সহযোগিতায় গত ৩০শে আগষ্ট কলম্বো Sri Ganaseeha Viharaya তে বিশেষ কৃতজ্ঞ পূজার আয়োজন করা হয়।
Sri Suvarati Maha viddalaya এর সহকারী শিক্ষক Panamure Rahula Thero এর উপস্থাপনায় উক্ত আয়োজনে সভাপতির আসন অলংকৃত করেন শ্রীলঙ্কার ভিক্ষু সংঘের( Ramañña Maha Nikaya) মহামান্য অনুনায়ক Dr. Venrable Waleboda Gunasiri Nahimi.
প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- Sri Lanka Ramañña Maha Nikaye Western Province Chief Sangha Nayaka Prof. Most Venerable Medagama Nandawansa Nahimi.
প্রধান অতিথির(Chief Guest) আসন অলংকৃত করেন-Mr. Md. Reyad Hossain, Counsellor(political) Bangladesh High Commission.
বিশেষ অতিথি ছিলেন যথাক্রমে -Director of Piriven Education Most Venerable Watinapaha Somananada Nahimi, Most Venerable Akuresse Ariyasagara Nahimi প্রাদেশিক সভার সেক্রেটারি Mrs. Dhammikaa Bikramasingha এবং
Honorable guest হিসেবে উপস্থিত ছিলেন Mr. Md. Nizamul Islam, Third Secretary, Bangladesh High Commission.
বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভা ও শ্রীলঙ্কা ভিক্ষু সংঘের সম্পর্ক উন্নয়নের প্রতীক হিসেবে নাগেশ্বর চারা রোপনের মধ্যে দিয়ে কৃতজ্ঞ পূজার উদ্বোধন করা হয়।
উক্ত কৃতজ্ঞ পূজার উদ্বোধন করেন-Most Venerable Soriyawewa Somananda Nahimi , Principle of Sri Lanka Maha Piriven and Sri Ghananaseeha Viharaya, Colombo.
বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভার পক্ষে লিখিত সূচনা বক্তব্য পাঠ করেন BBSCSL এর সভাপতি বিপসসী ভিক্ষু এবং তা সিংহলি ভাষায় উপস্থাপন করেন শ্রীমৎ অশ্বজিত ভিক্ষু।
সুচনা বক্তব্যে বিপসসী ভিক্ষু বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার ঐতিহাসিক সম্পর্ক, বাংলাদেশ হতে বুদ্ধের পবিত্র চুল ধাতু প্রদান, কৃতজ্ঞ পূজার প্রেক্ষাপট এবং বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার ভিক্ষুসংঘের যৌথ সামাজিক উন্নয়নের গুরত্ব আলোচনা করেন।
বাংলাদেশী বৌদ্ধদের জন্যে শ্রীলঙ্কার ভিসা প্রক্রিয়া সহজীকরনের উপর গুরুত্বারোপ করে প্রধান অতিথি মোহাম্মদ রিয়াদ হোসাইন বলেন, শ্রীলঙ্কা তার বর্তমান অর্থনৈতিক মন্দা দূর করতে পারে পর্যটন খাতকে উম্মুক্ত করে।
বাংলাদেশী বৌদ্ধরা শ্রীলঙ্কায় তীর্থভ্রমণের সুযোগ পেলে তা শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে ভূমিকা রাখবে। তিনি বাংলাদেশী বৌদ্ধদের এমন মানবিক উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান। শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশী বৌদ্ধদের শারিরীক গঠন, বর্ণ, সংস্কৃতি এবং একই বুদ্ধের আর্দশ অনুশীলন করে বলে মত প্রকাশ করেন প্রধান আলোচক -Sri Lanka Ramañña Maha Nikaye Western Province Chief Sangha Nayaka Prof. Most Venerable Medagama Nandawansa Nahimi. তিনি আরো বলেন এই কৃতজ্ঞ পূজায় তিনি অনেক আনন্দিত।
শ্রীলঙ্কার ভিক্ষু সংঘও জনগণ বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভাসহ সকল সহযোগিতাকারি বাংলাদেশী বৌদ্ধদেরদের প্রতি কৃতজ্ঞ। কৃতজ্ঞ পূজার সভাপতি -Sri Lanka Ramañña Maha Nikaye Anunayaka Dr. Most Venrable Waleboda Gunasiri Nahimi তাঁর বক্তব্যে বলেন- কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা ব্যক্তি দুর্লভ। তিনি ইতিপূর্বে কখনো এই ধরনের আয়োজন দেখেন নি।বাংলাদেশী বৌদ্ধদের তিনি ধন্যবাদ প্রদান করেন এবং বাংলাদেশ ভ্রমণের আগ্রহ প্রকাশ করেন।
একই সাথে শ্রীলঙ্কায় বাংলাদেশী বৌদ্ধ শিক্ষার্থীদের শিক্ষা গ্রহনের জন্যে সুযোগ দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। কৃতজ্ঞ পূজা আয়োজনটি Love from Bangladesh শিরোনামে ফেইসবুকে সরাসরি সম্প্রচার করে দি বুড্ডিস্ট টিভি।
উল্লেখ্য বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভার উদ্যেগে বাংলাদেশ, আমেরিকা, ফ্রান্স, স্পেন,দুবাই, থাইল্যান্ডে অবস্থানকারী বৌদ্ধদের সহযোগিতায় প্রথম পর্যায়ে ১২০ টি পরিবার, ২ টি বৌদ্ধ বিহার ও পিরিবেনে ৫ লক্ষ ৯৬ হাজার রুপির খাদ্যসামগ্রী প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে ধারাবাহিকভাবে আরো ২৮ লক্ষ রুপির খাদ্য ও শিক্ষা সামগ্রী প্রদান করে কৃতজ্ঞ পূজা করা হবে। উক্ত কৃতজ্ঞ পূজায় যারা সহযোগিতা করছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয়।
কৃতজ্ঞ পূজা বাস্তবায়নে সার্বিক সহযোগিতা করেছে Bangladesh Buddhist Student Council of Sri lanka এর সদস্যবৃন্দ।



