swadesh-sangbad লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
swadesh-sangbad লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

মঙ্গলবার, ১ আগস্ট, ২০২৩

শুভ আষাঢ়ী পূর্ণিমার তাৎপর্য

শুভ আষাঢ়ী পূর্ণিমার তাৎপর্য

 

শুভ আষাঢ়ী পূর্ণিমার তাৎপর্য


প্রতিসন্ধি গ্রহণ

বারাণসীর প্রায় পঞ্চাশ ক্রোশ উত্তরে নেপাল প্রদেশে রোহনী নদীর তীরে অবস্থিত কপিলাবস্তু নগরী। সেখানে রাজত্ব করতেন শাক্য বংশীয় রাজারা।মূলত শাক্য বংশীয়রা ইক্ষাকু বংশের বংশধর। ইক্ষাকুবংশীয় অম্ব নামে এক রাজার চারপুত্র ও চার রাজকন্যা রাজ্য থেকে নির্বাসিত হয়ে কপিলাবস্তুতে বাস করতেন।

রাজপুত্র ও রাজকন্যারা পরবর্তীতে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। তাঁরা স্বামী-স্ত্রী রূপে জীবনযাপন করতেন।

একসময় তাঁদের বংশবিস্তার হলো। তাঁদের বংশধরেরাই পরবর্তী সময়ের শাক্যবংশ, তাই কপিলাবস্তুর শাক্যেরা ইক্ষাকুবংশীয় বলে পরিচয় দেন।

শাক্য বংশের পূর্বসূরী রাজা জয়সেনের ছিল এক পুত্র সিংহহনু এবং এক কন্যা যশোধরা। সিংহহনুর চার পুত্র ও দুই কন্যা ছিল। শুদ্ধোদন, অমৃতোদন, ধৌতধন, শুক্লোদন। দুই কন্যা যথাক্রমে অমিতা ও প্রমিতা। রোহনী নদীর অপর পরবর্তী দেবদেহ নামে স্থানে রাজা অনুশাক্যের কন্যা ইন্দ্রাণীর মতো রূপবর্তী মহামায়ার সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন ধার্মিক ও পুণ্যবান রাজা শুদ্ধোদন। দীর্ঘ সাংসারিক জীবনে কোন সন্তান জন্মগ্রহণ না করায় রাজপ্রসাদের সুখ আর আনন্দ তাঁদের স্পর্শ করতে পারত না। সন্তানের মুখে মা ডাক শুনার জন্য মায়ের ব্যাকুলতা আর বংশের হাল ধরে রাখার জন্য পিতার উৎকণ্ঠা সর্বদা রাজপ্রসাদে ঘুরে বেড়াত। কিন্তু উপায় কি। কর্মের বিধান পাল্টায় কে ! রাজা রাজশক্তি প্রয়োগ করে রাজ্যশাসন কিংবা রাজ্যদখল করতে পারেন। কিন্তু পিতার আসন লাভ করা তার চেয়েও দুষ্কর হয়ে পড়েছিল। রাজা-রানীর মনে হতাশার অন্ত ছিল না।

এদিকে পৃথিবীতে অনাচার ছড়িয়ে পড়ল। দানবের প্রচণ্ড থাবায় মানবতা যেন বেহুঁশ হয়ে পড়ে আছে। কে জাগাবে তাকে। বিপন্ন মানবতা। মানবপুত্র গৌতম বুদ্ধ তখন ৫৭ কোটি ৬০ লক্ষ বৎসর ব্যাপী তুষিত স্বর্গে বাস করছিলেন। মানবতার এই নাজুক অবস্থা দেখে দেবকুল শংকিত হয়ে পড়লেন। ত্রিশ প্রকার পারমী পরিপূর্ণ জগতের ভাবী সম্যক সম্বুদ্ধের নিকট দেবগণের আকুল প্রার্থনা ‘হে দেবাতিদেব, পৃথিবী আজ অনাচারে পরিপূর্ণ, চারদিকে ত্রাহি ত্রাহি রব, মানুষ আজ পথভ্রষ্ট, দিন দিন মার শাসন আর মারের উৎপাত প্রকট হয়ে উঠছে, দানবের শ্বাসরুদ্ধকর ঘরে মানবতা আজ অবরুদ্ধ, বিপন্ন মানবতা আর মুমূর্ষ ধরা বাঁচাতে ত্রিলোকের কল্যাণে আপনি মর্ত্যলোকে জন্মগ্রহণ করুন। ’ ভাবীবুদ্ধ তাদের প্রার্থনা স্বীকার করলেন। কথা দিলেন, ‘আমি কপিলাবস্তুর ধার্মিক রাজা শুদ্ধোধনের ঔরষে এবং পূণ্যবতী রানী মহামায়ার গর্ভে জন্মধারণ করে ত্রিলোককে মুক্তির আলোয় উদ্ভাসিত করব। ’ সময় হতাশাগ্রস্ত রাজ-রানীকে আরো ব্যাকুল করে তুলল। কিন্তু না, এবার রানী মহামায়ার এক বিচিত্র স্বপ্ন দর্শন সমস্ত হতাশাকে বিদূরিত করে কপিলাবস্তুর কিছুক্ষণের জন্য হারিয়ে গেলেন স্বপ্নপুরীতে। চারদিকপাল দেবতা পালঙ্কসহ তাঁকে তুলে নিয়ে গেলেন অনবতপ্ত হ্রদের তীরে। দেবতারা তাঁকে সপ্তযোজন উচুঁ সমতল ভূমির উপরে এক মহাশাল বৃক্ষের নিচে রেখে শ্রদ্ধাবনত মস্তকে একপাশে দাঁড়িয়ে রইলেন। দেবপত্নীরা এসে রানীকে উক্ত হ্রদে ম্লান করিয়ে স্বর্গীয় ভূষণে অলংকৃত করলেন। চারদিক পাল দেবতারা রানীকে সুবর্ণময় প্রাসাদের দিব্যশয্যায় শয়ন করালেন। তারপর এক দিব্যকান্তি মহাপুরুষ শ্বেতহস্তীর রূপ ধারণ করে স্বর্ণময় পর্বত থেকে শুড়ে একটি শ্বেতপদ্ম নিয়ে অবতরণ করলেন। স্বেতহস্তীটি রানীর শয্যা তিনবার প্রদক্ষিণ করে তাঁর দক্ষিণপার্শ্ব ভেদ করে মাতৃজঠরে প্রবেশ করলেন। রাতের সেই অভিনব স্বপ্ন দর্শনের কথা তিনি মহারাজ শুদ্ধোধনকে জানালেন। রাজা রানীর শ্রীমুখ দিয়ে স্বপ্ন কথা শুনে অবাক হয়ে গেলেন। রাজা এই সকল অলৌকিক স্বপ্নের কারণ জানতে চৌষট্টিজন বিখ্যাত জ্যোতিষীকে ডেকে আনলেন। জ্যোতিষীরা ভবিষ্যদ্বাণী করে বললেন, ‘রানী সন্তানসম্ভবা। আপনার রাজপুরী আলোকিত করে পুত্রসন্তান জন্মগ্রহণ করবে। এ ভাবী শিশু সংসারি হলে রাজচক্রবর্তী রাজা হবেন। আর সংসার ত্যাগ করলে সম্যক সম্বুদ্ধ হবেন। ’ তুষিত স্বর্গ থেকে চ্যুত হয়ে বোধিসত্ত্ব এভাবে আষাঢ়ী পূর্ণিমা তিথিকে রাণী মহামায়ার গর্ভে প্রতিসন্ধি গ্রহণ করেন।

গৃহত্যাগ

সিদ্ধার্থ ছোট বেলা থেকেই চিন্তাশীল ছিলেন। সুযোগ পেলেই ধ্যান-মগ্ন হয়ে যেতেন। অফুরন্ত ভোগ সম্পদের আতিশয্যে তার জন্ম হলেও তিনি ক্রমশ সংসারের প্রতি বিতৃষ্ণ হয়ে উঠলেন। সংসারের প্রতি সিদ্ধার্থের বিতৃষ্ণাভাব এবং উদাসীনতা দেখে পিতা রাজা শুদ্ধোধন চিন্তিত হয়ে পড়লেন। রাজার একান্ত অভিপ্রায় রাজপুত্র সিদ্ধার্থ রাজচক্রবর্তী রাজা হউক। চার দ্বীপমালা বেষ্টিত জম্বুদ্বীপের একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করুক। অনেকটা তোড়জোড় করে ঊনিশ বছর বয়সে রাজকুমার সিদ্ধার্থকে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ করা হলো কোলীয়রাজ দণ্ডপাণির রূপসী কন্যা, পতিব্রতা, নারী ধর্মের মর্যাদার মূর্তি যশোধারার সাথে। পূর্ণ হলো রাজা শুদ্ধোধনের মনের কামনা। কিন্তু না ! জন্ম যার বিশ্বকল্যাণে তিনি সংসার বাঁধনে বাধা থাকবেন কি করে! মোহ! সে তো ভোগীদের বাঁধন। ত্যাগীর সামনে দাঁড়াবে কি করে! ছোটবেলা থেকেই যিনি জীব ও জগৎ নিয়ে চিন্তামগ্ন তিনি রাজপ্রাসাদের নরম বিছানায় পড়ে থাকবেন কি করে! একদিন তিনি নগর ভ্রমণে যাওয়ার কথা বললেন পিতাশ্রীকে। কথাটি শুনে রাজার মনে হলো যেন ঘাঁয়ের উপর বিষফোঁড়া। রাজপ্রাসাদের ভোগ বিলাসের আতিশয্যে থেকেও যে জীবনের দুঃখমুক্তির কথা ভাবে সে কি না যাবে নগর ভ্রমণে! কিন্তু উপায় কি। সব তো পারমী আর দৈবলীলা। ঠেকায় কে? রাজার মহাজ্যোতিষীদের ভবিষ্যদ্বাণীর কথা মনে আরেক বার নাড়া দিয়ে গেল। রাজা হ্যাঁ বলতে বাধ্য হলেন। কিন্তু চেষ্টা তো চালিয়ে যেতে হবে। রাজা অমাত্যদের কড়া নির্দেশ দিলেন কোনো জরাগ্রস্থ, ব্যাধিগ্রস্থ, মৃতব্যক্তি ও সংসারত্যাগী সন্ন্যাসী যাতে রাজকুমারের চোখ না পড়ে। অমাত্যরা তাদের ঠেকালেন। কিন্তু দেবরাজকে কে সামলাবে? সিদ্ধার্থ সারথি ছন্দককে নিয়ে রথে করে প্রথম বার গেলেন পূর্ব দিকে। কিছুদূর যেতে না যেতেই চোখে পড়ল এক জীর্ণশীর্ণ জরাগ্রস্থ ব্যক্তি। সিদ্ধার্থ চমকে উঠলেন। আরে সারথি থাম! থাম! সিদ্ধার্থের আত্মবিচলিত জিজ্ঞাসা-কোটরে পড়ে যাওযা দুটি চোখ, শরীর থেকে দুলে পড়েছে খসখসে চামড়া, কংকালের মতো অবয়ব, লাঠিতে ভর দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। ইনি কে? বেচারা সারথি ছন্দক নিরুপায়। না বলে যে উপায় নেই। ‘প্রভু, তিনি আমার আপনার মতো রক্তমাংসের গড়া একজন মানুষ। তার রূপ, যৌবন, শক্তি সামর্থ্য সবই ছিল। কিন্তু কালের স্রোত তাকে আজ এখানে ভাসিয়ে নিয়ে এসেছে। ’ সে এমনটি হতে চায় নি। সময় এবং জাগতিক বিধান তাকে এরকম করেছে। তার মা, বাবা, স্ত্রী, পুত্র, ঘর সংসার সবই আছে। রাখ! রাখ! সারথি আর নয় অনেক হয়েছে। আগে বল আমিও তার মতো হব কিনা। সারথির সহজ সরল প্রতি উত্তর- হ্যাঁ প্রভু, এটাই সংসারের ধর্ম। সেদিন আর নগর ভ্রমণ হলো না। মনে অনেক প্রশ্ন অনেক কষ্ট নিয়ে ফিরে গেলেন রাজমহলে। দ্বিতীয় বার বের হলেন দক্ষিণ দিকে। কিছু দূর যাওয়ার পরে সামনে পড়ে গেল এক ব্যাধিগ্রস্থ ব্যক্তি। একেবারে ক্ষীণপ্রাণ। যেকোনো মুহূর্তে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে পারে। তার সর্বাঙ্গে মৃত্যুর ছাপ ভর করছে। না পারছে বাঁচতে না পারছে মরতে। তাকে দেখে সিদ্ধার্থ আরো বেশি বিচলিত হয়ে পড়েলন। সারথি ছন্দক বুঝিয়ে দিলেন তাকে জীবনের করুণ দুর্দশার কথা। সেদিন আর নগর ভ্রমণ হলো না, ভারাক্রান্ত মনে ফিরে গেলেন রাজপ্রাসাদে। তৃতীয়বার বের হলেন পশ্চিম দিকে। হঠাৎ চোখে পড়ল এক করুণ দৃশ্য। চারজন লোক কাঁধে বহন করে নিয়ে যাচ্ছেন এক ব্যক্তিকে। ব্যক্তিটির কোনো সাড়া শব্দ নেই। তার পেছনে কাঁদতে কাঁদতে ছুটে চলেছেন কিছু নারী-পুরুষ। তাদের বুকফাটা বিলাপে বেজে উঠছে প্রিয়হারার কান্নার সুর। সারথি বুঝালেন জীবনের শেষ পরিণতির কথা। যাকে বলে মৃত্যু। সিদ্ধার্থের ব্যাকুল প্রশ্ন মৃত্যু কি? সারথি বুঝানের চেষ্ঠা করলেন, জন্ম-মৃত্যু ঈশ্বরের ইচ্ছাতেই হয়। ঈশ্বর কে? জীব ও জগতের সৃষ্টিকর্তা। অর্থাৎ জীবের সুখ-দুঃখের কারক। তিনি মেনে নিতে পারলেন না সারথির যুক্তিকে। রাজপ্রাসাদে ফিরে গেলেন, চিন্তায় বিভোর হয়ে গেলেন, খেতে, বসতে, চলতে, শুতে সর্বক্ষণ নগর ভ্রমণের ভয়ানক করুণ স্মৃতিগুলো তার চোখের পর্দায় ভেসে উঠে। তাকে বিচলিত করে তোলে।

চতুর্থ বার বের হলেন উত্তর দিকে। অনেক দূর গেলেন। কিছুই পড়ছে না সামনে। সারথির মনে কত দুশ্চিন্তা। এবার সামনে কি পড়ে কি জানি। সৌম্য শান্ত গৈরিক বসনধারী ভিক্ষাপাত্র হাতে অধঃদৃষ্টিতে ধীরমন্থর গতিতে এগিয়ে আসছেন কুমার সিদ্ধার্থের রথের দিকে এক সন্ন্যাসী। আহা! কি প্রশান্তি! তাঁর চোখে মুখে নেই কোনো কষ্টের ছাপ। তাঁকে দর্শনে মনে প্রশান্তি জেগে উঠল। ‘সারথি, ইনি কে ? সিদ্ধার্থের ভাবগম্ভীর প্রশ্ন। তিনি সংসারত্যাগী এক সন্ন্যাসী। ’ তাঁর উদ্দেশ্য কি? সংসারের যাবতীয দুঃখমুক্তির উপায় অন্নেষণে তিনি সন্ন্যাসী সেজেছেন। সারথির এই কথাগুলো সিদ্ধার্তের খুবই মনপুত হলো। নগর ভ্রমণের ইচ্ছা আর বেশিদিন স্থায়ী হল না। অনেকটা কৌতুহলী মনে রাজপ্রাসাদে ফিরে গেলেন। শান্ত সৌম্য ওই সন্ন্যাসী সিদ্ধার্থের মনের ভাবনায় জোয়ার এনে দিলেন। রাজমহলের নরম বিছানা, ভোগ-বিলাস, আমোদ-প্রমোদ কিছুই সিদ্ধার্থকে রমিত করতে পারছে না। ওই দিকে রাজকুমারের নগর ভ্রমণের প্রতিদিনের খবর রাজা রাখতেন। সব ঘটনা রাজাকে রীতিমত ভাবিত করে তুললেন। কুমার সিদ্ধার্থ পিতাকে সংসার ত্যাগের ইচ্ছা নিবেদন করলেন। যেন আকাশ ভেঙে মাথায় পড়ল। রাজা অনেকটা নির্বাক হয়ে পড়ল। রাজা সংসারের সুখ এর বর্ণনাচ্ছলে পুত্রকে সংসারে বেঁধে রাখতে চাইলেন। কেউ কাউকে ছাড়ছেন না। অবশেষে পুত্র পিতার কাছে বর চেয়ে বসলেন। ‘পিতাশ্রী, জরা, ব্যাধি, মুত্যু যেন আমাকে স্পর্শ না করে। আমার এই রূপ যৌবন যেন চির অটুট থাকে। আমি যেন চির অমর হতে পারি। ’ পিতার নিরাশ উত্তর- ‘বৎস, আমি কেন পৃথিবীর কোনো পিতাই তার সন্তানকে এই বর দিতে পারে না। তুমি আমার রাজ্য, রাজত্ব চাও আমি তোমাকে এখনই দিয়ে দেব। ’ ‘না পিতাশ্রী, আমার এসব কিছুর প্রয়োজন নেই। আমি চাই দুঃখমুক্তি। ’ রাজা সর্বদা নাচে-গানে, আমোদ-প্রমোদে পুত্রকে মাতিয়ে রাখতে ব্যর্থ চেষ্ট করতেন।

একরাতে কুমার সিদ্ধার্থ ঘুমে মগ্ন হয়ে আছেন। পরিচারিকারাও নৃত্যগীতের পরে পরিশ্রান্ত শরীরে ঘুমিয়ে পড়ল। গভীর রাতে কুমার জেগে উঠলেন। কোথাও পিনপতন শব্দ নেই। রাতের নীরবতা সবাইকে ঘুম পাড়িয়ে রেখেছে। নিদ্রামগ্ন নর্তকীদের পরিহিত এলোমেলো বস্ত্র, বীভৎস চেহারা এবং দেহের বিকৃত রূপ মুহূর্তের মধ্যে কুমারের হৃদয়কে সংসারের প্রতি আরও বীতস্পৃহ করে তুলল। সুরম্য রাজপ্রাসাদ তার কাছে মহাশ্মশান মনে হলো। সে রাতেই তিনি সংসার ত্যাগ করার দৃঢ় সংকল্প নিলেন। সেদিনই ছিল শুভ আষাঢ়ী পূর্ণিমা তিথি। দেবরাজ ইন্দ্র সিদ্ধার্থের সংসার ত্যাগ আসন্ন এবং গভীর রাতেই গৃহত্যাগ করবেন বুঝতে পেরে বিশ্বকর্মাকে প্রেরণ করলেন। ছদ্মবেশী দেবপুত্র সিদ্ধার্থকে অপূর্ব রাজপোশাক ও রাজমুকুটে সুসজ্জিত করলেন। সিদ্ধার্থ এই দিব্য অলৌকিক শক্তিকে অনুমান করতে পারলেন। পরম হিতৈষী পিতা রাজা শুদ্ধোধন, মমতাময়ী মাতৃদেবী মহাপ্রজাপতি গৌতমী, প্রিয়তমা স্ত্রী যশোধরা, প্রাণপ্রতিম পুত্র রাহুল, রাজৈশ্বর্য এবং প্রিয় প্রজাদের ভালোবাসার বাঁধন ছিন্ন করে ঊনত্রিশ বছর বয়সে মুক্তিকামী সিদ্ধার্থ সত্যের সন্ধানে গৃহত্যাগ করলেন।

ধর্মচত্র প্রবর্তন

গৃহত্যাগের পর রাজ নন্দন সিদ্ধার্থ সাধনায় নিমগ্ন হলেন। শুরু হলো দুঃখ মুক্তির অদম্য প্রচেষ্ঠা। ছয় বছর কঠোর সাধনা বলে অবশেষে তিনি অবর্তীণ হলেন কঠিন যাত্রায়। খুঁজে পেলেন মুক্তির পথের ঠিকানা। মানুষ কেন জন্ম-মৃত্যুর কবলে পড়ে, কে কোথায় যায়, কোথা হতে আসে, ইত্যাদি রহস্যময়তার সমাধান পেলেন। বুদ্ধত্ব লাভের পর প্রথমে তিনি চিন্তা করেছিলেন যে তিনি ধর্ম প্রচার করবেন না। কারণ সাধারণ তৃষ্ণাতুর মানুষেরা এই তৃষ্ণাক্ষয়ী নৈর্বাণিক ধর্ম বুঝবে না। কিন্তু দেব-ব্রক্ষার অনুরোধে স্বর্গ-মর্ত্য সবার কল্যাণে ধর্ম প্রচার করার চিন্তা মনে স্থান দিলেন। অবশেষে বুদ্ধ সারনাথে সর্বপ্রথম ধর্মচক্র প্রবর্ত্তন করলেন। এর প্রাচীন নাম ঋষিপতন মৃগদায়। ঋষিগণ গন্ধমাধব পর্বত থেকে আকাশ পথে এসে সেখানে অবতরণ করতেন। ঋষিদের পতন স্থান বলে সারনাথের অপর নাম ছিল ঋষিপতন। হত্যা করার জন্য আনীত মৃগদের সেখানে ছেড়ে দিয়েছিলেন বলে ইহার আরেক নাম মৃগদায় অর্থাৎ মৃগবন। প্রত্নতত্ত্ব সম্পর্কীয় বিষয়ের জন্য সারনাথ সুপ্রসিদ্ধ। অশোক স্তূপের পূর্ব পাশে যে মন্দিরের চিহ্ন বিরাজমান সেটাই ধর্মচক্র প্রবর্ত্তন স্থান। প্রত্যেক সম্যক সম্বুদ্ধের এই স্থানই প্রথম ধর্ম প্রচার স্থান। এই স্থান অপরিবর্তনীয়। প্রথম ধর্মদেশনায় ১৮ কোটি দেব-ব্রহ্মা জ্ঞান লাভ করেছিলেন। মানুষের মধ্যে একজন মাত্র জ্ঞান লাভ করতে সক্ষম হয়েছিলেন যার নাম কৌন্ডিন্য। সেদিন ছিল শুভ আষাঢ়ী পূর্ণিমা। শুভ আষাঢ়ী পূর্ণিমা দিনে বুদ্ধের জীবনে আরেকটি অলোকিক ঘটনা ঘটেছিল। সেই নান্দনিক ঘটনাটি হলো শ্রাবস্তীর গণ্ডাম্ব্র বৃক্ষমূলে বুদ্ধের ঋদ্ধি প্রদর্শন ও স্বর্গারোহন।

শ্রাবস্তীতে ঋদ্ধি প্রদর্শন

বুদ্ধের সময় আরো ছয়জন শাস্তা ছিলেন। তাঁদের অধিকাংশে ছিলেন নগ্ন সন্ন্যাসী। এক এক জনের মতবাদ ছিল এক এক রকম। নিজেদের দৃষ্টিতে যা ভালো মনে হয়েছে তা ভক্তদের উপর চাপিয়ে দিয়েছেন। মূলত তাঁরা কেউ সাধক কিংবা সত্য সন্ধ্যানী ছিলেন না। তাঁরা ছিলেন তীর্থিক। তাঁদের একজন সঞ্জযো বেলটুঠপুত্তো নামক শাস্তা অতি ধুরন্ধর প্রকৃতির ছিলেন। তার বাদ ছিল অমরা বিক্ষেপ। কিছুতেই ধরা দিতেন না। প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করলে বলতেন, ‘আমি এইরূপও বলি না, সেইরূপও বলি না। অন্যথাও আমি বলি না, না বলিয়াও আমি বলি না। ’ এমন উত্তর দিয়ে বাক্য বিক্ষেপ বা অমরা বিক্ষেপ করতেন। এমন কৌশল গ্রহণ করার কারণ ছিল মিথ্যা ধরা পড়ার ভয়, যেহেতু কিছুই তিনি সঠিকভাবে জানতেন না। সেই সময়ের মহারাজ অজাতশত্রু তার উত্তর শুনে বলেছিলেন, ছয় শাস্তার মধ্যে এ ব্যক্তি সবচেয়ে অজ্ঞানী। গৌতম বুদ্ধের কারণে তাদের লাভ সৎকারে ভাটা পড়ছিল। তাই তারা বুদ্ধের বিরুদ্ধে বলতেন। বিভিন্ন মিথ্যা অপপ্রচার এবং রটনা রটাতেন। তারা বিভিন্ন সময়ে বুদ্ধের চরিত্রে কলংক লেপনের চেষ্টাও করেছিলেন। কিন্তু কখনো সফল হতে পারেননি। বুদ্ধ এবং বুদ্ধের জ্ঞান এবং শক্তি সম্পর্কে তারা সম্যক অবগত ছিলেন না। তাদের শিষ্যরা বলে বেড়াতেন, বুদ্ধ তাদের চেয়ে অলৌকিক শক্তি সম্পন্ন নয়। অলৌকিক শক্তি প্রদর্শনের প্রতিযোগিতা হলে বুদ্ধ হেরে যাবেন। ইত্যাদি কথা নিয়ে বাড়াবাড়ি করতেন। বুদ্ধের শিষ্য এবং অনুসারীরা বুদ্ধকে এসব কথা বলতেন। কিন্তু সর্বজ্ঞ সর্বদর্শী বুদ্ধ এসব কথায় গুরুত্ব দিতেন না। পরে বুদ্ধ ভাবলেন এই অপপ্রচারে যদি মানুষের ভেতরে বুদ্ধের প্রতি কোনো সন্দেহ এবং অশ্রদ্ধা উৎপন্ন হয় কিংবা যারা অপপ্রচারে লিপ্ত আছেন তাদের পাপ হবে। এই সন্দেহ এবং দ্বন্দ্ব দূর করা প্রয়োজন। ভিক্ষুণী সংঘ প্রতিষ্ঠা সমাপ্ত হলে ষষ্ঠ বর্ষাযাপনের জন্যে ভগবান বুদ্ধ প্রয়াস করলেন রাজগৃহের অন্তঃপাতী মকুল পর্বতে। এই সময়ে রাজগৃহ শ্রেষ্ঠী জম্বুদ্বীপে প্রকৃত অর্হৎ আছেন কিনা পরীক্ষা করবার জন্যে একটি ৫০ হাত সুদীর্ঘ বংশদণ্ডের অগ্রভাগে একটি মহামূল্য চন্দন কাষ্ট নির্মিত পাত্র স্থাপন করে ঘোষণা করে দিলেন, ‘ঋদ্ধি বলে কেহ যদি শূন্যে উত্থিত হয়ে ওই পাত্রটি গ্রহণ করতে পারেন তবে উহা তাঁরই হবে। ’ আয়ুস্মান মহামৌদ্গল্যায়ন ও পিণ্ডোল ভরদ্বাজ রাজগৃহ নগরে ভিক্ষা চর্য্যায় বের হয়ে সন্ন্যাসীদের এই হঠকারিতা ও বিভ্রান্তি অবলোকন করেন। ভিক্ষা চর্যার পর মহামৌদ্গল্যায়ন নির্দেশক্রমে শ্রেষ্ঠী প্রদত্ত সেই চর্তুমধুর ভাণ্ডটি নেবার জন্য অভিজ্ঞাপাদক ধ্যান অনুশীলন করে বিরাট এক খণ্ড মেঘ সৃষ্টি করে, আকাশ পথে ভ্রমণ করছিলেন। জন সাধারণ স্থবিরের এই অদ্ভুত ক্রিয়াকলাপ দর্শনে বিস্মিত হল এবং জনগণ বলতে শুরু করল যে, ভদন্ত পিণ্ডোল ভারদ্বাজ, আপনি আমাদের ত্রাণ করুন। স্থবির মহোদয় তাদের আবেদনে সাড়া দিয়ে আকাশের মেঘ খণ্ড অপসারিত করে বংশাগ্রে স্থিত সেই চর্তুমধুর ভাণ্ডটি আপন হাতে নিয়ে ভূমিতে নেমে আসলেন এবং বেণুবন বিহারের দিকে অগ্রসর হতে থাকলে দলে দলে লোক তাঁর পশ্চাৎ অনুগমন করল। তীর্থিকদের মধ্যে কেহই উহা গ্রহণ করতে সমর্থ হল না। আয়ুস্মান মৌদ্গল্যায়নের নির্দেশে ‘পিণ্ডোল ভারদ্বাজ’ নামক জনৈক ভিক্ষু ঋদ্ধি বলে পাত্রটি গ্রহণ করেন। ভগবান বুদ্ধ উহা জানতে পেরে ভিক্ষুদের পক্ষে কাষ্ঠনির্মিত পাত্রের ব্যবহার এবং ঋদ্ধি প্রদর্শন উভয়ই নিষিদ্ধ করে দেন। এতে তীর্থিকেরা বলে বেড়াতে লাগল যে শাক্যপুত্রীয় শ্রমণেরা ঋদ্ধি প্রদর্শন করলে আমাদের সাথে পেরে উঠবে না। তাই শাক্যপুত্র গৌতম তাঁর শিষ্যদের ঋদ্ধি প্রদর্শনে নিষেধ করেছেন। বুদ্ধ বললেন আমার শিষ্যরা ঋদ্ধি প্রদর্শনে নিষিদ্ধ হলেও প্রয়োজন বোধে আমি নিজে উহা প্রদর্শন করতে পারি।

স্থির হলো চার মাস পরে শ্রাবস্তীর গণ্ডাম্ব বৃক্ষ মূলে তিনি তাঁর ঋদ্ধি প্রদর্শনের এই প্রতিশ্রুত রক্ষা করবেন। তীর্থিকেরা এ সংবাদ পেয়ে নির্দিষ্ট স্থানের চতুর্দিকে এক যোজনের মধ্যে যত আম্রবৃক্ষ আছে সমস্ত উৎপাটিত করে ফেলল। নির্দিষ্ট দিনে যথা স্থানে উপস্থিত হয়ে ভগবান বুদ্ধও জনসংঘ দেখলেন। আশেপাশে আম্র বৃক্ষের চিহ্নও বিদ্যমান নেই। রাজ্যেদ্যানের মালী গ- কোথা থেকে একটি পক্ক আম্রসংগ্রহ করে এনে ভগবানকে উপহার দিলেন। তিনি তাকে উহা মাটিতে পুতিতে আদেশ দিলেন। অতঃপর ভগবান ব্দ্ধু উহার উপরে হাত ধুয়ে জল দেওয়া মাত্র ইহা ৫০ হস্ত দীর্ঘ এক মহীরুহে পরিণত হয়। তখন ভগবান বুদ্ধ ঋদ্ধি বলে শূণ্যের উপর এক মণিময় বিহার ভূমি রচনা করে। তদুপরি উঠে ‘যমক প্রতিহার্য প্রদর্শন করেন। প্রথমে ভগবান বুদ্ধ শূণ্যে উত্থিত হন তাঁর উর্দ্ধাঙ্গ থেকে অগ্নিশিখা উত্থিত হয় ও নিম্নাঙ্গ থেকে বারিধারা বর্ষিত হতে থাকে। অতঃপর উর্দ্ধাঙ্গ থেকে বারিধারা ও নিম্নাঙ্গ থেকে অনলশিখা প্রবর্তিত হতে থাকে। তারপর পর্যায়ক্রমে ডানপার্শ্ব থেকে অগ্নি ও বাম পার্শ্ব থেকে জল, ডান পার্শ্ব থেকে জল বাম পার্শ্ব থেকে অগ্নি প্রবর্তিত হতে থাকে। এভাবে ক্রমান্বয়ে বাইশ প্রকার ঋদ্ধি প্রদর্শন সমাপ্ত হলে তিনি জনগণকে এমন ভাবে মোহাবিষ্ট করলেন যে তাদের মনে হল তিনি উক্ত মণিময় বিহার ভূমিতে দাঁড়িয়ে, বসে, শুয়ে থেকে বিভিন্ন প্রকারের দৃষ্টি বিভ্রান্তি ঘটালেন। বিভিন্ন ধরণের হৃদয়ছোঁয়া ঘটনাবলির কারণে আষাঢ়ী পূর্ণিমা একটি অনন্য পূর্ণিমা তিথির নাম। বৌদ্ধদের জন্য আষাঢ়ী পূর্ণিমা পূণ্যের সুবাসী বারতা নিয়ে হাজির হয়। আষাঢ়ী পূর্ণিমা থেকে আশ্বিনী পূর্ণিমা পর্যন্ত এই তিনমাস ভিক্ষুসংঘের পাশাপাশি বৌদ্ধ উপাসক-উপাসিকারাও বর্ষাবাস পালন করে থাকেন। এই সময়ে তারা প্রতি উপোসথ দিবসে অষ্টশীল গ্রহণ, দানকর্ম, ভাবনাকার্য সহ ইত্যাদি পূণ্যকর্মের মাধ্যমে বর্ষাবাস পালন করে থাকেন। এই সময়ে পূজনীয় ভিক্ষুসংঘরা তথ্য বহুল অনেক গুরুত্বপূর্ণ ধর্মদেশনা উপাসক উপাসিকাদের দান করেন। পাপকর্ম থেকে বিরত থাকার জন্য সাধারণ গৃহিরা সাধ্যমত চেষ্ঠা করেন। প্রাণী হত্যা থেকে বিরত থাকেন। এমনকি এই তিন মাসের মধ্যে সামাজিক অনুষ্ঠান বিয়ের অনুষ্ঠানও হয় না। ভিক্ষুসংঘরাও বর্ষাবাস চলাকালীন সময়ে কেউ বিহারের বাইরে থাকতে পারেন না। কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণে থাকার নিয়ম থাকলেও এক সপ্তাহের মধ্যে ফিরে আসতে হয়।




রবিবার, ২৭ নভেম্বর, ২০২২

অগ্রদূত বৌদ্ধ সংগঠনের ৬ষ্ট বর্ষপূর্তি এবং ৭ম বর্ষে পদার্পণ অনুষ্ঠান সম্পন্ন

অগ্রদূত বৌদ্ধ সংগঠনের ৬ষ্ট বর্ষপূর্তি এবং ৭ম বর্ষে পদার্পণ অনুষ্ঠান সম্পন্ন



গত ২৫ নভেম্বর ২০২২ ইং তারিখ রোজ শুক্রবার "অগ্রগতির অর্ধযুগে অগ্রদূত"-এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে অগ্রদূত বৌদ্ধ সংগঠনের অগ্রগামী তরুণ সদস্যরা তাদের প্রিয় সংগঠনের ৬ষ্ঠ বর্ষপূর্তি উপলক্ষে বিভিন্ন ধর্মীয় ও সেবামূলক কার্যক্রমের আয়োজন করে। ।



উদযাপন পরিষদের সদস্য সচীব শ্রীমাণ সুষ্ময় বড়ুয়া-এর সঞ্চালনায় এবং পরিচালনায় আয়োজিত অনুষ্ঠানের সর্বপ্রথম সংগঠনের সকল সদস্য সকাল ৮ঘটিকায় নন্দনকানন বৌদ্ধ বিহার, চট্টগ্রাম-এ মিলিত হয়। এরপর সকালবেলার বুদ্ধ পূজা দানের মধ্য দিয়ে শুরু হয় বর্ষপূর্তির নানা আয়োজন। বুদ্ধ পূজা শেষে বাসযোগে সদস্যরা সকলে চট্টগ্রামস্থ জোবরা গ্রামের উদ্দেশ্যে রওনা করে। নৈসর্গিক প্রাকৃতিক সৌন্দর্যবেষ্টিত জোবরা গ্রামের একটি অনাথ আশ্রমে অবস্থানরত সুবিধাবঞ্চিত শিশু-কিশোরদের সাথে ছিল সারাদিন জুড়ে বর্ষপূর্তির নানা আয়োজন। জোবরা গ্রামের অন্তর্গত সুগত বিহারে বুদ্ধ পূজা ও বুদ্ধ বন্দনাসহ বিভিন্ন ধর্মীয় কার্যক্রম দিয়ে অনুষ্ঠানের শুভসূচনা করা হয়। পরবর্তীতে অনাথ আশ্রমের শিশু-কিশোরদের নিয়ে আয়োজিত অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি শ্রীমাণ প্রত্যয় বড়ুয়া নিলয়। এতে উদ্বোধনী সংগীত, জাতীয় সংগীতসহ আরো অন্যান্য সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানসমূহ অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় পর্বে শ্রীমাণ উৎস বড়ুয়ার পরিচালনায় শিক্ষার্থীদের বিনোদন এবং বিভিন্ন প্রতিযোগিতামূলজ খেলাধুলার আয়োজন করা হয়। প্রতিযোগিতা শেষে সকল শিশু-কিশোরদের সাথে নিয়ে সংগঠনের সদস্যদের মধ্যাহ্নভোজ সম্পন্ন হয়। 



তৃতীয় পর্বে ঠিক বিকেল ৩টায় বৈকালিক বুদ্ধ বন্দনা, পঞ্চশীল গ্রহণ, অষ্টপরিষ্কার দান, পানীয় এবং অন্যান্য দানসামগ্রী দান, সূত্রপাঠ এবং ধর্মোপদেশ শ্রবণ করেন উপস্থিত সকল শিশু-কিশোর, সংগঠনের সদস্যসহ গ্রাম থেকে আগত পূণ্যার্থী তথা দায়ক-দায়িকাগণ। 

এতে ধর্মীয় বিভিন্ন দিকনির্দেশনামূলক ধর্মোপদেশ প্রদান করেন জোবরা সুগত বিহারের উপাধ্যক্ষ ভদন্ত নিরোধানন্দ ভিক্ষু মহোদয়। এছাড়াও সংগঠনের সম্মানিত উপদেষ্টা শ্রীমাণ সুজয় বড়ুয়া সংগঠনের ইতিপূর্বের বিভিন্ন কার্যক্রমসমূহ উপস্থাপনসহ বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানের শুভেচ্ছা ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে সংগঠনের শ্রীবৃদ্ধি কামনা করে বক্তব্য প্রদান করেন। উক্ত ধর্মীয় অনুষ্ঠানে আশীর্বাদক হিসেবে অংশ নেন জোবরা সুগত বিহারের অধ্যক্ষ কর্মযোগী ভদন্ত শীলরক্ষিত মহাথের মহোদয়। শ্রদ্ধেয় ভান্তের শারীরিক অবস্থা দেখে সংগঠনের উপদেষ্টা শ্রীমাণ সুজয় বড়ুয়া এবং সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও সভাপতি শ্রীমাণ প্রত্যয় বড়ুয়া নিলয় অগ্রদূত বৌদ্ধ সংগঠনের সকল সদস্যদের পক্ষ হতে ভান্তের চিকিৎসার জন্য শ্রদ্ধাদান প্রদান এবং ভান্তের সুস্থজীবন প্রার্থনা করেন। ধর্মীয় অনুষ্ঠান শেষে শ্রদ্ধেয় ভান্তের হাত দিয়ে বর্ষপূর্তির কেক কর্তন অনুষ্ঠান সম্পন্ন করা হয়। এছাড়াও, সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মাঝে শিক্ষা উপকরণ এবং বিভিন্ন ইভেন্টে বিজয়ীদের মাঝে পুরষ্কার প্রদান করা হয়। শিক্ষা উপকরণসমূহ হাতে পেয়ে সুবিধাবঞ্চিত শিশুদের মুখ হাসি ও আনন্দে ভরে ওঠে। সর্বশেষ পর্বে, সংগঠনের সকল সদস্যগণ জোবরা গ্রাম হতে নন্দনকানন বৌদ্ধ বিহারের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেন। নন্দনকানন বৌদ্ধ বিহারে পঞ্চশীল গ্রহণসহ ফানুস উত্তোলন করা হয়।সংগঠনের একনিষ্ঠ ও দায়িত্বশীল সদস্যা শ্রীমতী প্রজ্ঞা বড়ুয়া-এর তত্ত্বাবধানে ৬ষ্ঠ বর্ষপূর্তি-কে কেন্দ্র করে হাজার প্রদীপ প্রজ্জ্বলনের মধ্য দিয়ে জগতের সকল প্রাণির সুখ কামনা করে দিনের কার্যক্রমের সমাপ্তি ঘোষণা করা হয়।

উল্লেখ্য, বর্ষপূর্তি উদযাপনকে কেন্দ্র করে ১২ সদস্য বিশিষ্ট উদযাপন পরিষদ গঠন করা হয়। আহ্বায়ক শ্রীমাণ অনিন্দ্য বড়ুয়া এর আহ্বানে সংগঠনের প্রিয়মুখ শ্রীমাণ সুস্ময় বড়ুয়া-কে প্রধান অর্থাৎ সদস্য সচীব করে উদযাপন পরিষদটি গঠিত হয়। এতে আরো ছিলেনঃ অর্থসচীব-শ্রীমাণ প্রত্যয় চৌধুরী রিদ্দি, প্রধান সমন্বয়কারী-শ্রীমাণ উৎস বড়ুয়া, সমন্বয়কারী-শ্রীমতি প্রজ্ঞা বড়ুয়াসহ সংগঠনের অন্যান্য ৭জন সদস্য-সদস্যা

বুধবার, ১৬ নভেম্বর, ২০২২

রাঙামাটিতে নির্মিত হলো ১২৬ ফুট সিংহশয্যা বুদ্ধমূর্তি

রাঙামাটিতে নির্মিত হলো ১২৬ ফুট সিংহশয্যা বুদ্ধমূর্তি

 

আজ ১৬ নভেম্বর রাঙামাটির দুর্গম জুরাছড়ি উপজেলাতে উদ্ভোধন হলো বাংলাদেশের সর্ববৃহৎ সিংহশয্যা ১২৬ ফুট বুদ্ধমূর্তি।

রাঙামাটি রাজ বন বিহারের প্রধান ও পরিনির্বানপ্রাপ্ত মহাসাধক সাধনানন্দ মহাস্থবির (বনভান্তে) এর স্মৃতির উদ্দেশ্য ২০১২ সালের দিকে রাঙামাটির প্রত্যান্ত জুরাছড়ি উপজেলার সুবলং শাখা বন বিহারে ১২৬ ফুট সিংহ শষ্যা বুদ্ধ মূর্তিটি তৈরীর উদ্যোগ নেন উপজেলার বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী সাধারন মানুষ ও ভিক্ষুরা। ২০১৬ সালের ২ ফেব্রুয়ারি বুদ্ধমূর্তিটি নির্মাণ শুরু হয়ে ২০২১ সালের শেষ দিকে নির্মাণ কাজ সমাপ্ত হয়। দেশের সর্ববৃহৎ ১২৬ ফুট দীর্ঘতম ’সিংহশয্যা বুদ্ধ মূর্তির স্থপতি ছিলেন বিশ্বজিৎ বড়ুয়া, প্রকৌশলী প্রতিপদ দেওয়ান ও দয়াল চন্দ্র চাকমা। প্রকৌশলী ছিলেন তৃপ্তি শংকর চাকমা ও অঙ্কনের দায়িত্বে ছিলেন বিমলানন্দ স্থবির। এটি কোন সরকারী অর্থ সহায়তা ছাড়াই স্থানীয় মানুষের দানে অর্থ উত্তোলন করা প্রাায় চার কোটি টাকা ব্যয়ে এই বুদ্ধমূর্তিটি নির্মাণ করা হয়েছে। বিহারের মোট সাড়ে ১২ একর জায়গার মধ্যে প্রায় এক একর জায়গার উপর নির্মাণ করা হয় দেশের সর্ববৃহৎ এই সিংহ শয়্যা বুদ্ধ মূর্তিটি। এতে গৌতম বুদ্ধের বিশালাকার সিংহ শয্যা বুদ্ধ মূর্তিতে চোখ ধাধাঁনো নানান কারুকার্য করা হয়েছে।

বুধবার, ২১ সেপ্টেম্বর, ২০২২

রাউজান হোয়ারাপাড়া বৌদ্ধ অনাথ আশ্রমের আদিবাসী শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা

রাউজান হোয়ারাপাড়া বৌদ্ধ অনাথ আশ্রমের আদিবাসী শিক্ষার্থীর আত্মহত্যা

 


রাউজানের পূর্ব গুজরা ইউনিয়নের হোয়ারাপাড়া বৌদ্ধ অনাথালয়ে এনুছাই মারমা (১৫) নামের নবম শ্রেণির এক ছাত্রী আত্মহত্যা করেছে।  

২১ সেপ্টেম্বর বুধবার বিকেল সাড়ে ৫টায় এনুছাই এর লাশ পুলিশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে। পূর্বগুজরা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ বাবুল আজাদ জানিয়েছে অনাথালয়ের আবসিক ভবনের ৪র্থ তলার ছাদে পরিত্যাক্ত একটি কক্ষের পাখার রডের সাথে ওড়না গলায় পেঁছিয়ে সে আত্মহত্যা করেছে।

আত্মহননকারী ছাত্রী খাগড়াছড়ি জেলার গ্যাংদিয়া ইউনিয়ন পরিষদের ৩নম্বর ওয়ার্ডের পশিম তাইতং পাড়ার হুলাচুইসিং মারমার মেয়ে ও অগ্রসার অনাথালয় উচ্চ বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ছাত্রী। ওই পুলিশ কর্মকর্তা তার ধারণা মঙ্গলবার রাতের কোনো এক সময় সে আত্মহত্যা করেছে। অনাথ আশ্রমের পরিচালক সুমিতানন্দ থের বলেছেন ওই ছাত্রী আগে রাঙ্গামাটির একটি আশ্রমে ছিলেন, কয়েক মাস আগে সে এই আশ্রমে এসে নবম শ্রেণিতে ভর্তি হয়ে অন্যান্যদের সাথে অনাথ আশ্রমে থাকছে। তার এক বোনও হোয়ারাপাড়া ডিগ্রী কলেজে আবাসায়িক ব্যস্থায় থেকে পড়া লেখা করছে। এই পরিচালক জানায়, তিনি ঘটনার ৭ দিন আগের থেকে ছুটিতে ছিলেন। বুধবার এসে এই ঘটনা শুনেছেন আশ্রমের থানা ছাত্রীদের কাছ থেকে। ঘটনা শুনে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের জানিয়ে পুলিশে খবর দেন। ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে দেখা যায় এনুছাই মারমা হলের চারতলার ছাদের দেয়ালের কয়েক জায়গায় এক যুবকের নামের সাথে যোগ চিহ্ন দিয়ে তার নাম লিখেছে। এই লেখার তার তারিখ লিখেছে ২০.০৯.২২। স্থানীয়দের ধারণা প্রেম ঘটিত কারণে কোনো আঘাত পেয়ে হয়ত ওই ছাত্রী আত্মহত্যা করতে পারে।বিকালে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন সহকারি পুলিশ সুপার (রাউজান-রাঙ্গুনিয়া সার্কেল) আনোয়ার হোসেন শামীম, পূর্ব গুজরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা আব্বাস উদ্দিন, পশ্চিম গুজরা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান সাহাবুদ্দিন আরিফ। পুলিশ সুপার বলেছেন ময়নাতদন্তের পর ঘটনা জানা যাবে।

নিউজঃরাউজাননিউজ থেকে নেওয়া


রবিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২

প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল হতে বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের অনুকূলে ২ কোটি টাকা বিশেষ অনুদানের চেক প্রদান

প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল হতে বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের অনুকূলে ২ কোটি টাকা বিশেষ অনুদানের চেক প্রদান

 

আসন্ন প্রবারণা পূর্ণিমা ও কঠিন চীবর দান ২০২২ উপলক্ষে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল হতে বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের অনুকূলে ২ (দুই) কোটি টাকা বিশেষ অনুদান বরাদ্দ করা হয়। অদ্য ১৮ সেপ্টেম্বর, ২০২২খ্রি:, রবিবার মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব ড. আহমদ কায়কাউস ২ (দুই) কোটি টাকার অনুদানের চেক প্রদান করেন। বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের পক্ষে উক্ত অনুদানের চেক গ্রহণ করেন ট্রাস্টের সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান-২ বেগম আরমা দত্ত এমপি। এ সময় ট্রাস্টের ভাইস চেয়ারম্যান মি: সুপ্ত ভূষণ বড়ুয়া ও ট্রাস্ট সচিব মি. জয়দত্ত বড়ুয়া উপস্থিত ছিলেন ।  

নিউজঃফেইসবুক হতে  সংগ্রহ




রবিবার, ১১ সেপ্টেম্বর, ২০২২

সম্মিলিত প্রবারণা পূর্ণিমা উদ্যাপন  পরিষদের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত

সম্মিলিত প্রবারণা পূর্ণিমা উদ্যাপন পরিষদের সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত

 


বৌদ্ধদের অন্যতম জাতীয় ধর্মীয় উৎসব শুভ প্রবারণা পূর্ণিমা সুষ্ঠ ও সুন্দর, নিরাপদে, নিবিঘেœ প্রশাসনের সার্বিক সহযোগিতায় বৌদ্ধিক ভাবধারায় প্রতিবছরের ন্যায় উদ্যাপনের লক্ষে গত ১০ সেপ্টেম্বর শনিবার সন্ধ্যা ৬ টায় নগরীর জামালখানস্থ বাংলাদেশ বুড্ডিস্ট ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে সম্মিলিত প্রবারণা পূর্ণিমা উদ্যাপন পরিষদর উদ্যোগে এক মতবিনিময় সভা বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতি যুব’র সাধারণ সম্পাদক স্বপন কুমার বড়ুয়ার সভাপতিত্বে বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাষ্টি মিথুন রশ্মি বড়ুয়ার সঞ্চালনায় এক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়। সাধারণ সভায় বক্তারা বলেন, আশ্বিনী পূর্ণিমার অপর নাম প্রবারণা পূর্ণিমা। প্রবারণা শব্দের অর্থ আশার তৃপ্তি, অবিলাস পূরণ, শিক্ষা সমাপ্তি অথবা ধ্যান শিক্ষা সমাপ্তি বুঝায়। প্রবারণার এ পূর্ণ তিথিতে বিশ্বের সমগ্র বৌদ্ধ জাতির আনন্দ উৎসবের দিন বলা যায়। এই পবিত্র দিবসে বৌদ্ধরা আকাশে ফানুস উড়ায়। ঝাঁকঝমক পূর্ণভাবে প্রবারণা পূর্ণিমা পালনের জন্য বিভিন্ন সাংগঠনিক দিক নিয়ে আলোক পাত করেন। কোতোয়ালী থানা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক টিংকু বড়ুয়া, রাউজান উপজেলা আওয়ামী লীগের শিক্ষা ও পাঠচক্র বিষয়ক সম্পাদক ত্রিদীপ কুমার বড়ুয়া, বাংলাদেশ বৌদ্ধ কৃষ্টি প্রচার সংঘ যুব’র সভাপতি পুষ্পেন বড়ুয়া কাজল, সাংস্কৃতিক সংগঠক প্রণব রাজ বড়ুয়া, মহানগর যুবলীগ নেতা স্বরূপ বিকাশ বড়ুয়া বিতান, সনত বড়ুয়া, কাজল প্রিয় বড়ুয়া, বাংলাদেশ বৌদ্ধ যুব পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সজিব বড়ুয়া ডায়মন্ড, মহানগর স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা রোমেল বড়ুয়া রাহুল, সংগঠক এপেক্সিয়ান মৃণাল কান্তি বড়ুয়া, সংগঠক তমাল বড়ুয়া, কনিক বড়ুয়া, অমল কান্তি বড়ুয়া, শুভ বড়ুয়া প্রমুখ। বিভিন্ন বৌদ্ধ যুব ও ছাত্র সংগঠনের মধ্যে ত্রিরত্ন সংঘ, সম্যক, পলিটেকনিক বৌদ্ধ ছাত্র পরিষদ, নন্দন, মহাকারুনিক, মারমা যুব সমাজ, মঙ্গল সংঘ, আর্য সংঘ সহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। সভায় সর্বসম্মতিক্রমে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কমিটির স্বাস্থ্য বিষয়ক উপ-কমিটির সদস্য ডা. বিদ্যুৎ বড়ুয়াকে আহ্বায়ক বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ট্রাষ্টি মিথুন রশ্মি বড়ুয়াকে প্রধান সমন্বয়কারী, বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতি যুব’র সাধারণ সম্পাদক স্বপন কুমার বড়ুয়াকে সদস্য সচিব করে ১২১ সদস্য বিশিষ্ট সম্মিলিত প্রবারণা পূর্ণিমা উদ্যাপন পরিষদ ২০২২ গঠন করা হয়। সভায় চট্টগ্রামসহ বৌদ্ধ বিহার সমূহের সার্বিক নিরাপত্তা বিধান করার লক্ষ্যে প্রজাতন্ত্রের উর্দ্ধতন কর্মকর্তাবৃন্দের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও স্মারকলিপি প্রদান এবং আগামী ৯ অক্টোবর প্রবারণা পূর্ণিমায় নন্দনকানন বৌদ্ধ মন্দির চত্বর সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বৌদ্ধ অধ্যুষিত এলাকায় ঝাঁক-জমক পূর্ণভাবে ফানুস উত্তোলনের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় এবং আগামী ২৪ সেপ্টেম্বর শনিবার সন্ধ্যা ৬ টায় জামালখানস্থ বুড্ডিস্ট ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে পরবর্তী সভা আহ্বান করা হয়।

নিউজঃফেইসবুক থেকে সংগ্রহকৃত

শুক্রবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২২

দান, সেবা ও মানবতার শিক্ষা - মধু পূর্ণিমা

দান, সেবা ও মানবতার শিক্ষা - মধু পূর্ণিমা



আজ শুভ মধু পূর্ণিমা। বৌদ্ধ বিশ্বের ইতিহাসে এটি অন্যতম এক শুভ তিথি। বিশেষ করে বর্ষাবাসের দ্বিতীয় পূর্ণিমাতে এটি উদযাপিত হয়। বর্ষাবাসের দ্বিতীয় পূর্ণিমা তিথি ভাদ্র মাসে এই উৎসব উদযাপন করা হয়। তাই এর অপর নাম ভাদ্র পূর্ণিমা।

তবে বিশ্বে এটি ‘মধু পূর্ণিমা’ নামে পরিচিত। বুদ্ধ জীবনের নানা ঘটনা এবং দান, ত্যাগ ও সেবার নানা মহিমায় দিবসটি ধর্মীয় ও ঐতিহাসিক দিক থেকে বেশ গুরুত্ব বহন করে।

মধু পূর্ণিমার শুভ এ দিনটি বৌদ্ধরা নানা উৎসব, আনন্দ ও আয়োজনের মধ্য দিয়ে উদযাপন করেন। নানা শ্রেণি-পেশা ও বয়সের মানুষ এদিন বুদ্ধ ও ভিক্ষুসংঘকে মধুদান করার জন্য উৎসবে মেতে ওঠেন। বিহারে দেখা যায় সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত মধুদানের এক আনন্দঘন পরিবেশ। বিহারে সন্ধ্যায় বৌদ্ধকীর্তন ও পুঁথিপাঠ করা হয় এবং বিশ্ব শান্তি কামনায় সমবেত প্রার্থনা ও প্রদীপ প্রজ্বালন করা হয়।

আমরা জানি, মহাকারুণিক ভগবান বুদ্ধ বুদ্ধত্ব লাভের পর মোট ৪৫ বছর বর্ষাবাসব্রত পালন করেন অরণ্য, পর্বত, গুহা, বিহার ইত্যাদি নানা স্থানে। তার মধ্যে দশম বর্ষাবাস যাপন করেন পারিলেয়্য নামক বনে। বৌদ্ধ ভিক্ষুদের বিবাদ ও বিনয় সম্পর্কিত নানা অসন্তোষ আচার-আচরণের কারণে তিনি সেই পারিলেয়্য বনে গিয়েছিলেন। কোসাম্ভীর ঘোষিতারামে দু’জন পণ্ডিত ভিক্ষুর মধ্যে ক্ষুদ্র একটি বিনয় বিধান নিয়ে মতবিরোধের সৃষ্টি হয়। তারা উভয়ে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে সংঘভেদ করেন। স্বয়ং ভগবান বুদ্ধ তাদের এ মতবিরোধ মেটানোর জন্য শ্রাবস্তী থেকে সেখানে আসেন এবং বিরোধ মিটিয়ে দিয়ে পুন শ্রাবস্তীতে প্রত্যাবর্তন করেন। বুদ্ধ চলে যাওয়ার পর তাদের মধ্যে আবার বিরোধ সৃষ্টি হয় এবং একে অপরকে দোষারোপ করেন।

এতে তাদের অনুসারী ভিক্ষুসংঘের মধ্যেও বিরোধ দেখা দেয়। বুদ্ধ দেখলেন, তারা নিজেরা নিজেদের আত্মকলহে জড়িয়ে তাদের অনুসারীদের মধ্যে একটি বিভাজন তৈরি করে দেন, যা সংঘ ও সদ্ধর্ম-শাসনের জন্য ভীষণ ক্ষতিকর। বৌদ্ধ পরিভাষায় একেই বলে ‘সংঘভেদ’। তখন বুদ্ধ একাকী বসবাসের পরিকল্পনা করে বালুকারাম বিহারে চলে যান এবং তার শিষ্য ভৃগু স্থবির ও শিষ্যম্ললীকে নিয়ে চারিকাব্রত করেন

। পরে প্রাচীন বংশরক্ষক মৃগদায়ের দুই কুলপুত্রকে মৈত্রী ও মিলন সম্পর্কে উপদেশ দিয়ে পারিলেয়্য বনে চলে যান এবং সেই বনের একটি ভদ্রশাল রক্ষিত বৃক্ষমূলের বনসন্ডে বর্ষাব্রত অধিষ্ঠান গ্রহণ করেন। সেখানেই তিনি তিন মাস যাপন করেন, ধ্যান-সমাধি করেন। সে বনে ছিল নানা পশুপাখি ও জীবজন্তুর আবাস। বুদ্ধের অপরিমেয় মৈত্রী ও করুণার প্রভাবে বনের সেসব পশুপাখি ও জীবজন্তু তাদের হিংস্রতা পরিহার করে।

ভাদ্র মাসের এ পূর্ণিমার সঙ্গে বুদ্ধজীবনে বানরের মধুদানের এক বিরল ঘটনা জড়িয়ে আছে। সেদিনের বানরের মধুদান বৌদ্ধ ইতিহাস ও সাহিত্যে একটি নিছক ঘটনা মনে হলেও এ থেকে আমরা সেবা, ত্যাগ ও দানচিত্তের এক মহৎ শিক্ষা পেয়ে থাকি।

বনের একটি বানর হয়ে বুদ্ধকে দান দিয়ে যেখানে তার মহৎ উদারতা ও ত্যাগের পরাকাষ্ঠা প্রদর্শন করেছে, তৃপ্তি পেয়েছে এবং আনন্দে উদ্বেলিত হয়েছে, সেখানে আমরা মানুষ হয়েও আজ বিপন্ন মানুষের প্রতি সেই উদারতা, ত্যাগ ও দানের মহিমা দেখাতে পারছি না।

আজ বিবেকের কাছে আমাদের প্রশ্ন- মানবতা, সেবা আর ত্যাগে আমাদের চিত্তকে কি আমরা সেভাবে প্রসারিত করতে পারি না? মধু পূর্ণিমা আমাদের সবার জীবনে শান্তি ও কল্যাণ বয়ে আনুক। আমাদের হৃদয় ভরে উঠুক অপার মৈত্রী-করুণায় এবং দান, দয়া, সেবা আর অকৃত্রিম ভালোবাসায়। সব্বে সত্তা সুখীতা ভবন্তু- জগতের সকল জীব সুখী হোক। ভবতু সব্ব মঙ্গলং- সকলের মঙ্গল লাভ হোক। বাংলাদেশ সমৃদ্ধ হোক। বিশ্বে শান্তি বর্ষিত হোক।

প্রফেসর ড. সুকোমল বড়ুয়া : সাবেক চেয়ারম্যান, পালি অ্যান্ড বুদ্ধিস্ট স্টাডিজ বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং সভাপতি, বিশ্ব বৌদ্ধ ফেডারেশন বাংলাদেশ চ্যাপ্টার

মঙ্গলবার, ৬ সেপ্টেম্বর, ২০২২

দ্রব্যমূল্যের চড়া দামে ফানুস বানাতে বেগ পেতে হচ্ছে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের

দ্রব্যমূল্যের চড়া দামে ফানুস বানাতে বেগ পেতে হচ্ছে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের

 

ছবিটি চট্টগ্রাম নন্দনকানন বৌদ্ধ বিহার থেকে তোলা
নিলা চাকমা:
অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে পালিত হবে বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ধর্মীয় উৎসব প্রবারণা পূর্ণিমা। অনেকে আশ্বিনী পূর্ণিমাও বলে থাকেন। পবিত্র এ দিনটিতে গৌতম বুদ্ধের কেশ ধাতুর প্রতি পূজা ও সম্মান প্রর্দশনের জন্য ফানুস উড়ানো হয়। বৌদ্ধ সম্প্রদায়ের মন্দিরগুলোতে  ফানুস বানানোর ধুম পড়েছে।

গত শুক্রবার চট্টগ্রাম নন্দনকান বৌদ্ধ বিহারেও ফানুস বানাতে ব্যস্ত দেখা যায় তরুণদের। কয়েক বছরের তুলনায় এবারের ফানুস বানানোর সব উপদান দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় হতাশা প্রকাশ করছেন তারা।

সাধারণত ফানুস বানাতে দরকার কাগজ , গাম, বাঁশ , কাপড়, মোম, বতিসহ নানা উপাদান। এসব উপাদানগুলোর মধ্যে আবার কোনটার দাম বেড়েছে ৫০ টাকা, কোনটার দাম বেড়েছে ২ শ টাকা থেকে ৩ শ টাকা। ফানুস বানানোর সবচেয়ে দরকারী উপাদান হলো কাগজ।

মঙ্গলবার(০৬ সেপ্টেম্বর ) আন্দরকিল্লা বাজার ঘুরে দেখা যায়,  সিংগেল লেয়ারের কাগজের বর্তমান মূল্য ৭০০ টাকা, ডাবল লেয়ারের মূল্য ১২৭০-১৩০০ টাকা। যেটা দুয়েক সপ্তাহ আগে এর মূল্য ছিলো যথাভাবে ৫৫০ টাকা এবং ১১ শ টাকা। এর আগের বছর কাগজটির মূল্য ছিলো ৪০০ থেকে ৮৫০ টাকা পর্যন্ত। ফেবিকল গামের লিটার প্রতি বেড়েছে ৩০ টাকা থেকে ৪০ টাকা। একই সাথে প্রতি প্যাকেট মোম বাতির দাম বেড়েছে ৫ টাকা থেকে ১০ টাকা।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কাগজ বিক্রেতা জানান, জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় মালামাল পরিবহনে বাড়তি টাকা দিতে হচ্ছে আমাদের। সেই সাথে কারখানায় চাহিদা মাফিক কাগজ উৎপাদন না হওয়ায় এ বছর কাগজের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। সামনে আরও বৃদ্ধি পাওয়ারও ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি।

এদিকে দেওয়ানহাটের বাঁশ বিক্রির দোকানেও দাম বাড়ার একই চিত্র লক্ষ্য করা যায়।ফানুস বানানোর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান বাঁশ । তবে যেকোনো বাঁশ  দিয়ে বানানো যায় না। ফানুস বানাতে দরকার হয়  মুলি বাঁশ। বড় মুলি বাঁশের বর্তমান মূল্য ১৭০ টাকা, ছোট ৯০ টাকা। যা গত বছর ছিলো ৫০ টাকা থেকে সর্বোচ্চ ১০০ টাকা। পরিবহনে বাড়তি টাকা গুনতে হওয়ায় এ বছর বাঁশের দাম বৃদ্ধি বলে জানান বিক্রেতারা।

দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে তরুণ বৌদ্ধ সংগঠনগুলো। অগ্রদূত বৌদ্ধ সংগঠনের সভাপতি প্রত্যয় বড়ুয়া জানান, আমাদের  সংগঠনের দুয়েক জন বাদে সবাই শিক্ষার্থী। সংগঠনের সদস্যদের থেকে কিঞ্চিত চাঁদা তুলে আমরা প্রতি বছর ফানুস উত্তোলনের আয়োজন করি। কিন্ত সব জিনিসের দাম বাড়ায় আমাদের চাঁদার পরিমাণ বৃদ্ধি করা হয়েছে।  শিক্ষার্থী হওয়ায় অনেকের চাঁদা দিতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। তাই দামটা সহনীয় পর্যায়ে রাখার জন্য আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর তদারকি কামনা করছি।

নন্দন সংগঠনের সভাপতি অতনু বড়ুয়া বলেন, এবার কাগজ, গাম, বাঁশ সব উপাদান চড়া মূল্য কিনতে হচ্ছে আমাদের। পড়ুয়া শিক্ষার্থীদের চাঁদা ছাড়া আর অন্য কোন অর্থ নেই। আমাদের সামান্য অর্থে প্রতি বছর শ খানেক ফানুস উত্তোলন হয় সংগঠন থেকে কিন্ত এবার জিনিসপত্রের দাম বাড়ায় আমরা ৪০টা টার্গেট দিয়েছি। আমাদের এ সামান্য চেষ্টায় বৌদ্ধ সিনিয়র সংগঠনের সহোযোগিতা কামনা করছি।

সোমবার, ৫ সেপ্টেম্বর, ২০২২

বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভার উদ্যোগে দানের টাকায় শ্রীলঙ্কার প্রতি কৃতজ্ঞ পূজা

বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভার উদ্যোগে দানের টাকায় শ্রীলঙ্কার প্রতি কৃতজ্ঞ পূজা

প্রতিবেদন - বিপসসী ভিক্ষু

বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভার উদ্যেগে আমেরিকা, কানাডা, ফ্রান্স, স্পেন, থাইল্যান্ড, দুবাই ও বাংলাদেশী বৌদ্ধদের সহযোগিতায় গত ৩০শে আগষ্ট কলম্বো Sri Ganaseeha Viharaya তে বিশেষ কৃতজ্ঞ পূজার আয়োজন করা হয়।

 Sri  Suvarati Maha viddalaya এর সহকারী শিক্ষক Panamure Rahula Thero এর উপস্থাপনায় উক্ত আয়োজনে সভাপতির আসন অলংকৃত করেন শ্রীলঙ্কার ভিক্ষু সংঘের( Ramañña Maha Nikaya) মহামান্য অনুনায়ক Dr. Venrable Waleboda Gunasiri Nahimi. 

প্রধান আলোচক হিসেবে উপস্থিত ছিলেন- Sri Lanka Ramañña Maha Nikaye Western Province Chief Sangha Nayaka Prof. Most Venerable Medagama Nandawansa Nahimi. 

প্রধান অতিথির(Chief Guest) আসন অলংকৃত করেন-Mr. Md. Reyad Hossain, Counsellor(political) Bangladesh High Commission. 

বিশেষ অতিথি ছিলেন যথাক্রমে -Director of Piriven Education Most Venerable Watinapaha Somananada Nahimi, Most Venerable Akuresse Ariyasagara Nahimi প্রাদেশিক সভার সেক্রেটারি Mrs. Dhammikaa Bikramasingha এবং 

Honorable guest হিসেবে উপস্থিত ছিলেন Mr. Md. Nizamul Islam, Third Secretary, Bangladesh High Commission. 

বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভা ও শ্রীলঙ্কা ভিক্ষু সংঘের সম্পর্ক উন্নয়নের প্রতীক হিসেবে নাগেশ্বর চারা রোপনের মধ্যে দিয়ে কৃতজ্ঞ পূজার উদ্বোধন করা হয়। 

উক্ত কৃতজ্ঞ পূজার উদ্বোধন করেন-Most Venerable Soriyawewa Somananda Nahimi , Principle of Sri Lanka Maha Piriven and Sri Ghananaseeha Viharaya, Colombo. 

বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভার পক্ষে লিখিত সূচনা বক্তব্য পাঠ করেন BBSCSL এর সভাপতি বিপসসী ভিক্ষু এবং তা সিংহলি ভাষায় উপস্থাপন করেন শ্রীমৎ অশ্বজিত ভিক্ষু। 

সুচনা বক্তব্যে বিপসসী ভিক্ষু বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার ঐতিহাসিক সম্পর্ক, বাংলাদেশ হতে বুদ্ধের পবিত্র চুল ধাতু প্রদান, কৃতজ্ঞ পূজার প্রেক্ষাপট এবং বাংলাদেশ ও শ্রীলঙ্কার ভিক্ষুসংঘের যৌথ সামাজিক উন্নয়নের গুরত্ব আলোচনা করেন। 

বাংলাদেশী বৌদ্ধদের জন্যে শ্রীলঙ্কার ভিসা প্রক্রিয়া সহজীকরনের উপর গুরুত্বারোপ করে প্রধান অতিথি মোহাম্মদ রিয়াদ হোসাইন বলেন, শ্রীলঙ্কা তার বর্তমান অর্থনৈতিক মন্দা দূর করতে পারে পর্যটন খাতকে উম্মুক্ত করে। 

বাংলাদেশী বৌদ্ধরা শ্রীলঙ্কায় তীর্থভ্রমণের সুযোগ পেলে তা শ্রীলঙ্কার বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনে ভূমিকা রাখবে। তিনি বাংলাদেশী বৌদ্ধদের এমন মানবিক উদ্যোগকে সাধুবাদ জানান। শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশী বৌদ্ধদের শারিরীক গঠন, বর্ণ, সংস্কৃতি এবং একই বুদ্ধের আর্দশ অনুশীলন করে বলে মত প্রকাশ করেন প্রধান আলোচক -Sri Lanka Ramañña Maha Nikaye Western Province Chief Sangha Nayaka Prof. Most Venerable Medagama Nandawansa Nahimi. তিনি আরো বলেন এই কৃতজ্ঞ পূজায় তিনি অনেক আনন্দিত।

শ্রীলঙ্কার ভিক্ষু সংঘও জনগণ বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভাসহ সকল সহযোগিতাকারি বাংলাদেশী বৌদ্ধদেরদের প্রতি কৃতজ্ঞ। কৃতজ্ঞ পূজার সভাপতি -Sri Lanka Ramañña Maha Nikaye Anunayaka Dr. Most Venrable Waleboda Gunasiri Nahimi তাঁর বক্তব্যে বলেন- কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করা ব্যক্তি দুর্লভ। তিনি ইতিপূর্বে কখনো এই ধরনের আয়োজন দেখেন নি।বাংলাদেশী বৌদ্ধদের তিনি ধন্যবাদ প্রদান করেন এবং বাংলাদেশ ভ্রমণের আগ্রহ প্রকাশ করেন।

একই সাথে শ্রীলঙ্কায় বাংলাদেশী বৌদ্ধ শিক্ষার্থীদের শিক্ষা গ্রহনের জন্যে সুযোগ দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেন। কৃতজ্ঞ পূজা আয়োজনটি Love from Bangladesh শিরোনামে ফেইসবুকে সরাসরি সম্প্রচার করে দি বুড্ডিস্ট টিভি। 

উল্লেখ্য বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভার উদ্যেগে বাংলাদেশ, আমেরিকা, ফ্রান্স, স্পেন,দুবাই, থাইল্যান্ডে অবস্থানকারী বৌদ্ধদের সহযোগিতায় প্রথম পর্যায়ে ১২০ টি পরিবার, ২ টি বৌদ্ধ বিহার ও পিরিবেনে ৫ লক্ষ ৯৬ হাজার রুপির খাদ্যসামগ্রী প্রদান করা হয়। পরবর্তীতে ধারাবাহিকভাবে আরো ২৮ লক্ষ রুপির খাদ্য ও শিক্ষা সামগ্রী প্রদান করে কৃতজ্ঞ পূজা করা হবে। উক্ত কৃতজ্ঞ পূজায় যারা সহযোগিতা করছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করা হয়।   

কৃতজ্ঞ পূজা বাস্তবায়নে সার্বিক সহযোগিতা করেছে Bangladesh Buddhist Student Council of Sri lanka এর সদস্যবৃন্দ।



বৃহস্পতিবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২২

রাউজানের দক্ষিণ জয়নগরে  ফাঁসিতে ঝুলে এক যুবকের আত্মহত্যা

রাউজানের দক্ষিণ জয়নগরে ফাঁসিতে ঝুলে এক যুবকের আত্মহত্যা




বৃহস্পতিবার (১-সেপ্টেম্বর) সকালে নিজ ঘরের তীরের সঙ্গে গলায় রুশি দিয়ে আত্মহত্যা করেন।

নিহত যুবক সজল বড়ুয়া (২৮) উপজেলার ৮নম্বর কদলপুর ইউনিয়নের ৯নম্বর ওয়ার্ডের দক্ষিণ জয়নগর বড়ুয়া পাড়া গ্রামের মৃত নিমর্ল বড়ুয়ার পুত্র।

স্থানীয় লোকজন জানান, নিহত সজল বড়ুয়া অনেক বছর প্রবাসে ছিলেন। গত কয়েক বছর আগে দেশে চলে আসার পর আর যাইনি। পরে চট্টগ্রাম শহরে বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করতেন। গত এক বছর ধরে তিনি ঘরে আছেন। সারাদিন মোবাইল, কম্পিউটার ও টেপ নিয়ে ব্যস্ত থাকতো। ধারণা করা হচ্ছে তিনি গেমসে আসক্ত ছিলেন।

নিহতের ছোট ভাই সজীব বড়ুয়া জানান, তার বড় ভাই সজল বড়ুয়া ইতালি বা ফ্রান্সে যাওয়া জন্য ভারতে ভিসা প্রসেসিং করতে যান। সেখানে তার ইউরোপ যাওয়ার স্বপ্ন পূরণ হয়নি।

এছাড়াও সজলের জন্য কিছু টাকা ঋণ গ্রস্ত হন তার পরিবার। তিনি আরও জানান, রাতে একসাথে সবাই মিলে প্রতিদিনের মতো খাওয়ার খেয়ে ছিলো। পরে সজল পরিবারের কাউকে কিছু না বলে ফাঁসিতে ঝুলে আত্মহত্যা করেন।

স্থানীয় মেম্বার আলী আকবর জানান, ঘটনার খবর পেয়ে আমরা পুলিশকে খবর দিলে। পুলিশ এসে তার লাশ উদ্ধার করেন। কি কারণে আত্মহত্যা করেছে বিষয়টি নিশ্চিত করা যাইনি।

তারা ৩ ভাই এক বোনের মধ্যে সেই সবার বড়।

রাউজান থানার ওসি আবদুল্লাহ আল হারুন জানান, পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে লাশ উদ্ধার করে মর্গে প্রেরণ করেছেন। রিপোর্ট পেলে ঘটনার বিস্তারিত জানা যাবে

বিঃদ্রঃউক্ত  নিউজটি  রাউজন নিউজ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছে

মঙ্গলবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২১

আজ ২৯ সেপ্টেম্বর রামু ট্রাজেডির ৯ বছর

আজ ২৯ সেপ্টেম্বর রামু ট্রাজেডির ৯ বছর


 কক্সবাজারের রামু ট্রাজেডির ৯ বছর পূর্ণ হয়েছে আজ। ফেসবুকে গুজবের জেরে ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর রাতে রামুর বৌদ্ধ বিহার ও বসতিতে হামলা, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগে ১৯টি মামলা হয়। তবে এখনো সাক্ষীর অভাবে গতিহীন হয়ে পড়েছে ১৮টি মামলার বিচার কাজ। অন্যদিকে ১টি মামলা প্রত্যাহার করেন বাদী নিজেই।
জানা গেছে, ২০১২ সালের ২৯ সেপ্টেম্বর উত্তম বড়ুয়া নামের এক বৌদ্ধ যুবকের ফেসবুকে পবিত্র কোরআন অবমাননার একটি ছবি ট্যাগকে কেন্দ্র করে রামুতে সংঘটিত হয় ভয়াবহ ঘটনা। পরে রাতের অন্ধকারে রামুতে ১২টি বৌদ্ধ বিহার, ৩০টি বসতঘরে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে দুস্কৃতিকারীরা। ৩০ সেপ্টেম্বর রাতে একইভাবে উখিয়া ও টেকনাফে আরও ৭টি বৌদ্ধ বিহার ও ১১টি বসতঘরে হামলা ও অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা।

©RTv

শনিবার, ৫ জুন, ২০২১

"সীবলি সংসদ" চট্টগ্রামের ত্রি-বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত

"সীবলি সংসদ" চট্টগ্রামের ত্রি-বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত


 

চট্টগ্রামের ঐতিহ্যবাহী সংগঠন ‘‘সীবলী সংসদ” চট্টগ্রামের ত্রি-বাষিক সাধারণ সভা ৪ঠা জুন বিকেলে নগরীর জামালখানস্থ বাংলাদেশ বুড্ডিস্ট ফাউন্ডেশন মিলনায়তনে বিকাশ কান্তি বড়ুয়া’র সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উদ্বোধনী বক্তব্য দেন চারুলতা নিউজ পোর্টাল (সিএনপি) এর মডারেটর লেখক-সাংবাদিক  বিপ্লব বড়ুয়া।  সাধারণ সভায় সম্মানিত অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ বুড্ডিস্ট ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক তুষার কান্তি বড়ুয়া, বাংলাদেশ বৌদ্ধ সমিতি যুব এর সাধারণ সম্পাদক স্বপন কুমার বড়ুয়া, বাংলাদেশ বৌদ্ধ যুব পরিষদ চট্টগ্রাম অঞ্চলের সভাপতি সজীব বড়ুয়া ডায়মন্ড ও বুদ্ধজ্যোতি আন্তর্জাতিক সংস্থা বাংলাদেশ চাপ্টারের পরিচালক বিজয় বড়ুয়া। শাওন বড়ুয়া’র সঞ্চালনায় সভায় অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন- সিনিয়র সহ-সভাপতি রণেশ চৌধুরী নন্তু, সুদীপ বড়ুয়া, সুজিত বড়ুয়া, ইমন বড়ুয়া, রুবেল বড়ুয়া, রাকেশ বড়ুয়া, প্রান্তিক বড়ুয়া, সৌরভ চৌধুরী প্রমুখ।



সাধারণ সভায় ২০২১-২০২৪ মেয়াদের ৩১ সদস্য বিশিষ্ট সীবলী সংসদ চট্টগ্রামের নবনির্বাচিত কমিটির পুনরায় সভাপতি নির্বাচিত হন বিকাশ কান্তি বড়ুয়া ও সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন সৌরভ চৌধুরী। নবনির্বাচিত কার্যকরি কমিটির নেতৃবৃন্দরা হলেন- সিনিয়র সহ-সভাপতি রণেশ চৌধুরী নন্তু, সহ-সভাপতি মি. বিপ্লব বড়ুয়া,  মি. সুজিত বড়ুয়া, ইমন বড়ুয়া,  রিপন বড়ুয়া । সাধারণ সম্পাদক সৌরভ চৌধুরী, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক পিকু বড়ুয়া, সহসাধারণ সম্পাদক শুভময় বড়ুয়া, সাংগঠনিক সম্পাদক রুবেল বড়ুয়া, সহসাংগঠনিক সম্পাদক শান্তনু বড়ুয়া ও দোলন বড়ুয়া, অর্থ সম্পাদক রাকেশ বড়ুয়া, সহঅর্থ সম্পাদক প্রবাল বড়ুয়া, দপ্তর সম্পাদক শাওন বড়ুয়া, সহদপ্তর সম্পাদক দীপ্র বড়য়া, পরিকল্পনা সম্পাদক প্রান্তিক বড়ুয়া, সহপরিকল্পনা সম্পাদক মিলশন বড়ুয়া, প্রচার সম্পাদক অপু বড়ুয়া, সহপ্রচার সম্পাদক বিজয় বড়ুয়া,হিসাব নিরীক্ষণ সম্পাদক সঞ্চয় বড়ুয়া, সাংস্কৃতিক সম্পাদক ধ্রুব বড়ুয়া, মহিলা সম্পাদিকা বর্ণমালা বড়ুয়া, প্রকাশনা সম্পাদক মুন্না বড়ুয়া, সহপ্রকাশনা সম্পাদক অপরুপ বড়ুয়া, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক অতনু বড়ুয়া, ধর্মীয় সম্পাদক বিমলানন্দ ভিক্ষু, সমাজকল্যান সম্পাদক টিটু বড়ুয়া। কার্যনির্বাহী সদস্য- সুদীপ বড়ুয়া, সৌরভ বড়ুয়া, তপু বড়ুয়া রবি। ।

শুক্রবার, ২১ মে, ২০২১

সরকারি কমার্স কলেজের নতুন অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ পেয়েছেন অধ্যাপক সুসেন কুমার বড়ুয়া

সরকারি কমার্স কলেজের নতুন অধ্যক্ষ পদে নিয়োগ পেয়েছেন অধ্যাপক সুসেন কুমার বড়ুয়া

 


সরকারি কমার্স কলেজের নতুন অধ্যক্ষ সুসেন কুমার বড়ুয়া।বৃহস্পতিবার (২০ মে) শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের এক প্রজ্ঞাপনে তাঁকে নিয়োগ দেয়া হয়।

অধ্যাপক সুসেন কুমার বড়ুয়ার জন্ম গ্রহন করেন কক্সবাজার জেলার উখিয়া উপজেলার রত্নাপালং গ্রামে।

অধ্যাপক সুসেন কুমার বড়ুয়া ১৯৯৩ সালে বিসিএস শিক্ষা ক্যাডারে নিয়োগ প্রাপ্ত হয়ে শিক্ষকতা জীবনের সূচনা করেন খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজে। ১৯৯৫ থেকে ২০১৩ সাল পর্যন্ত বোয়ালখালী কানুনগোপাড়া স্যার আশুতোষ সরকারি কলেজে হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তারপর সহযোগী অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পেয়ে হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে যোগদান করে শিক্ষকতা শুরু করেন রাঙ্গামাটি সরকারি কলেজে। 

পরে রাঙ্গামাটি সরকারি কলেজ থেকে ২০১৫ সালে আসেন চট্টগ্রাম সরকারি কর্মাস কলেজে হিসাব বিজ্ঞান সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে যোগদান। এভাবে প্রায় দীর্ঘ সাতাশ বছর শিক্ষার্থীদের পাঠদান করে শিক্ষকতা জীবন অতিবাহিত করেন সুসেন কুমার বড়ুয়া। গত বছরের ৩০ জুলাই অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পান তিনি।

শনিবার, ২০ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

রাউজান থানার অন্তর্গত ছাদাংগড়খীল গ্রামের (প্রেমণী বৈদ্যের বাড়ি'র) কমলেন্দু বড়ুয়া'র বাড়িতে আগুন কেড়ে নিল সর্বস্ব

রাউজান থানার অন্তর্গত ছাদাংগড়খীল গ্রামের (প্রেমণী বৈদ্যের বাড়ি'র) কমলেন্দু বড়ুয়া'র বাড়িতে আগুন কেড়ে নিল সর্বস্ব


মানবতাই প্রকৃত ধর্ম।

গত ১৭/০১/২০২১ ইংরেজী  তারিখ আনুমানিক রাত ১১:৩০ মিনিট  রাউজান থানার অন্তর্গত ছাদাংগড়খীল গ্রামের (প্রেমণী বৈদ্যের বাড়ি'র) কমলেন্দু বড়ুয়া'র বাড়িতে ভয়াভহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
তারা এখন খুব কষ্টে দিন অতিবাহিত করছে।
এই মূহুর্তে তাদের পাশে থাকা আপনার আমার সকলের প্রয়োজন।
সকলের প্রতি অনুরোধ যার যার সাধ্যমত সহযোগিতার মাধ্যমে এগিয়ে আসুন।

সাহায্য পাঠানোর নাম্বার:

Bkash - 01761617302
রকেট - 016320505102
DBBL A/C - 7017415890491
(ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের বিকাশ, রকেট এবং ব্যাংক একাউন্ট নাম্বার) 

সার্বিক সহযোগিতাঃ অগ্রদূত বৌদ্ধসংগঠন(DSTBP)

সোমবার, ১ ফেব্রুয়ারী, ২০২১

বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভার নির্বাচনে বুদ্ধরক্ষিত মহাথের সভাপতি ও ড. সংঘপ্রিয়  মহাথের  মহাসচিব নির্বাচিত

বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভার নির্বাচনে বুদ্ধরক্ষিত মহাথের সভাপতি ও ড. সংঘপ্রিয় মহাথের মহাসচিব নির্বাচিত

বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভার নির্বাচনে বুদ্ধরক্ষিত মহাথের সভাপতি ও ড. সংঘপ্রিয় মহাসচিব  বাংলাদেশের প্রাচীনতম ও জনপ্রিয় সাংঘিক প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ সংঘরাজ ভিক্ষু মহাসভা কার্যকরী পরিষদের নির্বাচনে রাউজান পূর্বআধার মানিক বোধিনিকেতন বিহারের অধ্যক্ষ ভদন্ত  বুদ্ধরক্ষিত মহাথের সভাপতি ও মহাসচিব পদে  নির্বাচিত হয়েছেন পটিয়া কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ বিহার ও কল‍্যাণ প্রকল্পের প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক ড. সংঘপ্রিয় মহাথের।সাংগঠনিক সচিব পদে অধ্যাপক জ্ঞানরত্ন মহাথের, যুগ্ম মহাসচিব- এম,বোধিমিত্র মহাস্থবির, অর্থ-সম্পাদক- ধর্মপাল মহাস্থবির ও প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক- উত্তমানন্দ স্থবির নির্বাচিত হন।

[ফেইসবুক থেকে নেওয়া]

রবিবার, ৩১ জানুয়ারী, ২০২১

বাংলাদেশ বৌদ্ধ ভিক্ষু মহাসভার ২৯তম সংঘনায়ক মনোনীত হলেন ধর্মাধিপতি বনশ্রী মহাথেরো ও উপসংঘনায়ক মনোনীত হন সদ্ধর্মরশ্মি রতনশ্রী মহাথেরো

বাংলাদেশ বৌদ্ধ ভিক্ষু মহাসভার ২৯তম সংঘনায়ক মনোনীত হলেন ধর্মাধিপতি বনশ্রী মহাথেরো ও উপসংঘনায়ক মনোনীত হন সদ্ধর্মরশ্মি রতনশ্রী মহাথেরো

 


আজ ৩১ জানুয়ারি, ২০২১,রবিবার বাংলাদেশ বৌদ্ধ ভিক্ষু মহাসভার সাধারন সভায়  চান্দগাঁও সার্বজনীন কেন্দ্রীয় বৌদ্ধ বিহারে ২৯তম সংঘনায়ক মনোনীত হলেন ধর্মাধিপতি বনশ্রী মহাথেরো ও উপসংঘনায়ক মনোনীত হন সদ্ধর্মরশ্মি রতনশ্রী মহাথেরো।পরম পূজনীয় শ্রদ্ধেয় ২৯তম সংঘনায়ক ভান্তেকে ও উপসংঘনায়ক ভান্তেকে বন্দনা ও শ্রদ্ধাভিনন্দন।

শুক্রবার, ২৯ জানুয়ারী, ২০২১

উত্তর গুজরা ডোমখালী ড.জ্ঞানশ্রী প্রভাতী শিক্ষা কেন্দ্রের ৪৩ জন শিক্ষার্থীর মাঝে শিক্ষা সামগ্রী এবং ধর্মীয় বই বিতরণ

উত্তর গুজরা ডোমখালী ড.জ্ঞানশ্রী প্রভাতী শিক্ষা কেন্দ্রের ৪৩ জন শিক্ষার্থীর মাঝে শিক্ষা সামগ্রী এবং ধর্মীয় বই বিতরণ


গতকাল ২৯শে জানুয়ারি,শুক্রবার  উত্তর গুজরা ডোমখালী ড. জ্ঞানশ্রী প্রভাতী শিক্ষা কেন্দ্রের ৪১ জন শিক্ষার্থী সহ মোট ৪৩ জন শিক্ষার্থীকে শিক্ষা সামগ্রী এবং ধর্মীয় বই বিতরণ।



উক্ত অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন ডোমখালী গ্রামের শিক্ষাবিদ বাবু মোহনলাল বড়ুয়া,বিশিষ্ট ব্যবসায়ি ও দানবীর শেখর কান্তি বড়ুয়া,রিন্টু বড়ুয়া,নিজন বড়ুয়া।
এছাড়া সীবলী সংঘের পক্ষে রানা বড়ুয়া,বিশ্বমিত্র বড়ুয়া,জুয়েল বড়ুয়া,অপু বড়ুয়া,মাইকেল বড়ুয়া,জ্যাকসন বড়ুয়া,চন্দন বড়ুয়া,আকাশ বড়ুয়া,জিকু বড়ুয়া সহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।
উক্ত অনুষ্টানে বক্তব্য রাখেন বাবু প্রত্যয় বড়ুয়া নিলয় তিনি বলেন


তিনি বলেন আজ ২৯শে জানুয়ারি,শুক্রবার উত্তর গুজরা ডোমখালী ড. জ্ঞানশ্রী প্রভাতী শিক্ষা কেন্দ্রের ৪১ জন শিক্ষার্থী সহ মোট ৪৩ জন শিক্ষার্থীকে শিক্ষা সামগ্রী এবং ধর্মীয় কিছু বই নিয়ে আমরা আপনাদের মাঝে হাজির হয়েছি।
আমাদের উদ্দেশ্যে আমাদের ছোট ছোট ভাই বোনদের প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষার পাশাপাশি ধর্মীয় শিক্ষা এবং পারিবারিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে তোলা।
আমাদের এই বৌদ্ধ ধর্মটাকে যদি আমরা ধরে রাখতে চাই তাহলে অন্যান্য শিক্ষার পাশাপাশি আমাদের ছেলেমেয়েদের ধর্মীয় শিক্ষাও দিতে হবে।


ধর্মীয় শিক্ষা কেন দিতে হবে???

বর্তমান সময়ে লক্ষ্য করলে দেখবেন আমাদের মধ্যে ধর্মান্তরিত ব্যাপারটা খুব বেড়ে গেছে ধর্মান্তরিত হওয়ার মূল কারণ হচ্ছে কিন্তু নিজের ধর্ম সম্পর্কে না জানা, না বুঝা, এবং ধর্মীয় শিক্ষার অভাব।
ছোট থেকেই যদি আমরা আমাদের ভাই বোনদের মাঝে ধর্মীয় শিক্ষাটি ছড়িয়ে দিতে পারি তাহলে অদূর ভবিষ্যৎতে আমাদের ছেলেমেয়েরা আর বিপদগামী হবে না।
তিনি আরো বলেন পরমপূজ্য শীলানন্দ স্থবির (ধুতাঙ্গ ভান্তে) এবং ধুতাঙ্গ ভান্তে'র ৩২ তম প্রিয় শিষ্য (আমার দাদা) ধর্মচক্ষু ভান্তের সহযোগীতায় আজ আমাদের এই শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ সম্পন্ন করতে পেরেছি। 
পরিশেষে উত্তর গুজরা ডোমখালী ড. জ্ঞানশ্রী প্রভাতী শিক্ষা কেন্দ্রের সকলকে অসংখ্য ধন্যবাদ এবং আপনাদের এমন উদ্যোগ কে সাধুবাদ জানিয়ে উনি তার বক্তব্য শেষ করেন।
যাদের উদ্যোগে এই শিক্ষা সামগ্রী বিতরণ করা হয়ঃ
প্রদেশ বড়ুয়া
বীনা বড়ুয়া
আধার মানিক,নতুন বাজার।
শিপন বড়ুয়া
পিংকি বড়ুয়া
বাহির সিগন্যাল, বড়ুয়া পাড়া, চান্দঁগাও।

রবিবার, ১৭ জানুয়ারী, ২০২১

বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের জন্য ঢাকায় সার্বজনীন বৌদ্ধ শ্মশান নির্মাণের সিদ্ধান্ত

বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের জন্য ঢাকায় সার্বজনীন বৌদ্ধ শ্মশান নির্মাণের সিদ্ধান্ত

 

ছবি banglanews24.com থেকে নেওয়া

বৌদ্ধ ধর্মালম্বীদের জন্য ঢাকায় সার্বজনীন বৌদ্ধ শ্মশান নির্মাণ ও বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্ট তহবিল বাড়ানো সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।

এছাড়া ‘মুজিব শতবর্ষ’ উপলক্ষে আশ্রয়ণ প্রকল্পে (জমি আছে ঘর নেই-তাদের জন্য বাড়ি নির্মাণ) বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের পক্ষ থেকে দুইটি বাড়ি দেওয়ার বিষয়েও সিদ্ধান্ত হয়েছে।

ধর্ম প্রতিমন্ত্রী ও বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের চেয়ারম্যান মো. ফরিদুল হক খানের সভাপতিত্বে রোববার (১৭ জানুয়ারি) সচিবালয়ে বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের ৯০তম বোর্ড সভায় এসব সিদ্ধান্ত হয়েছে।

সভায় প্রবারণা পূর্ণিমা ও কঠিন চীবরদান উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর অনুদান যথাযথভাবে ও সময়মত বিতরণের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে।
রোববার মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়।

ধর্ম প্রতিমন্ত্রী বলেন, কোনো সম্প্রদায়কে পেছনে রেখে দেশের সামগ্রিক উন্নয়ন সম্ভব নয়।

প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে উন্নত বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সব ধর্মীয় জনগোষ্ঠীর কল্যাণে পর্যাপ্ত পরিমাণ উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের সংবিধানে ধর্ম নিরপেক্ষতার মূলনীতি যুক্ত করে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ বিনির্মাণের ভিত্তিপ্রস্তর করে গেছেন।

বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য কন্যার নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির আদর্শ দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।

প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, বাংলাদেশের সংখ্যালঘু ধর্মীয় সম্প্রদায়সমূহের কল্যাণ ও নিরাপত্তা বিধানের মাধ্যমে বাংলাদেশকে আমরা একটি সভ্য দেশ হিসেবে গড়ে তুলতে বন্ধ পরিকর। সেই লক্ষ্যে সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

সভায় বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সিনিয়র ভাইস-চেয়ারম্যান-১ ও সংসদ সদস্য (এমপি) রমেশ চন্দ্র সেন, ধর্ম সচিব ও ট্রাস্টি মো. নূরুল ইসলাম, ভাইস-চেয়ারম্যান সুপ্ত ভূষণ বড়ুয়া, ট্রাস্টি বাসন্তী চাকমা এমপি, দয়াল কুমার বড়ুয়া, দীপক বিকাশ চাকমা, মং ক্য চিং চৌধুরী, থে মংলা রাখাইন, দীপংকর বড়ুয়া পিন্টু ও ডালিম কুমার বড়ুয়া অংশ নেন।

এছাড়াও ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মো. আলতাফ হোসেন চৌধুরী, ‘প্যাগোডা ভিত্তিক প্রাক-প্রাথমিক শিক্ষা’ প্রকল্পের প্রকল্প পরিচালক মো. সাখাওয়াত হোসেন এবং বৌদ্ধ ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাস্টের সচিব জয়দত্ত বড়ুয়া উপস্থিত ছিলেন।